Published in সমকাল on Thursday, 26 May 2016
ভারতে রফতানি বেড়েছে ২২%
সমকাল প্রতিবেদক
ভারতে রফতানি আয় বাড়লেও গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) রফতানি বেড়েছে আগের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ। গত অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে রফতানি বাড়ার হার ছিল ৩৯ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি কমলেও ভারতে রফতানি বৃদ্ধির প্রবণতাকে সার্বিক বিবেচনায় ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাণিজ্য বিশ্লেষক এবং রফতানিকারকেরা। তবে বর্তমানের তুলনায় রফতানি অনেক বেশি বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন তারা। তাদের মতে, শুল্কমুক্ত সুবিধা, প্রতিবেশী এবং বড় বাজার হিসেবে ভারতে রফতানি এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না।
চার বছর আগে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণার পরও ভারতে বাংলাদেশের রফতানি দেশটির মোট আমদানির ১ শতাংশেরও কম। বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে ভারত। এতে বাংলাদেশের অংশ ৫০ কোটি ডলারের মতো। সম্ভাবনা এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভারতে রফতানি কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না।
বাংলাদেশি পণ্যের মান যাচাই, মানসনদ গ্রহণ, পণ্যের মোড়কে লেবেল এবং প্যাকেজিং সংক্রান্ত জটিলতাই রফতানিতে প্রধান প্রধান সমস্যা। বাংলাদেশের পোশাক খাতের ৪১টিসহ মোট ৬৪ পণ্যে ভারত শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা করে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, গত ৯ মাসে ভারতে ২২ শতাংশ হারে রফতানি বৃদ্ধির তথ্য বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই সুখবর। প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পরও সুখবর এ কারণে যে, আলোচ্য সময়ে চীনসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশে রফতানি কমেছে। সে তুলনায় ভারতে বেড়েছে। তবে ভারত সম্ভাবনাময় বড় বাজার। সেখানে প্রতিবেশী হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ বড় জায়গা করে নিতে পারে। সে বিবেচনায় ভারতে রফতানি এখনও কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের অশুল্ক বাধায় রফতানি বিঘি্নত হচ্ছে। এর মধ্যে ল্যাব টেস্ট, মানসনদের স্বীকৃতি, দুর্বল অবকাঠামো প্রধানত দায়ী। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রফতানিকারকদের মাধ্যমেই ভারতের দেওয়া শূন্য শুল্কসুবিধা শতভাগ কাজে লাগানো যাবে না। এ সুবিধা কাজে লাগাতে ভারতের বাজারকে কেন্দ্র করে এ দেশে ভারতীয় বিনিয়োগসহ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস জুলাই-মার্চ সময়ে ভারতে বিভিন্ন পণ্য রফতানি থেকে আয় এসেছে ৪৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে প্রধান রফতানি পণ্য পোশাকের ওভেনের রফতানি থেকে আয় এসেছে ৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ কোটি ৭৩ লাখ ৭৩ হাজার ডলার। নিট খাতের রফতানি ১ কোটি ৬০ লাখ ৯৮ হাজার ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। তবে অন্যান্য বাজারের মতো ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একচেটিয়া প্রাধান্য নেই। বরং সর্বোচ্চ আয় ১২ কোটি ৬২ লাখ ডলার এসেছে টেক্সটাইল ফাইবার, পেপার ইয়ার্ন ও ওভেন টেক্সটাইল রফতানি থেকে। এ ছাড়া প্লাস্টিক, গরুর হাড়, শুকনো খাবার, গুড় ইত্যাদি কয়েকটি পণ্যও রয়েছে বড় পণ্যের তালিকায়। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।