Dr Debapriya Bhattacharya on undermined economy amidst political stalemate

Published in Kaler Kantho on Tuesday, 10 February 2015.

‘রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

untitled-12_185921

 

সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বর্তমান সময়ের সংকটকে শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা হিসেবে দেখলে হবে না- এটাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানও করতে হবে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে। এটা খুবই সময়োপযোগী কর্মসূচি ছিল। কিন্তু এরপর তারা কী করবে? তারা কি বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিকেই শুধু দায়ী করবে, না সরকারকেও সমাধানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলবে? রবিবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনাভিত্তিক টক শো আকিজ সিমেন্ট মুক্তবাক অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় আরো বলেন, বর্তমান সংকট বেশি দিন থাকলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়বে এবং এটা আমাদের জন্য শুভকর হবে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে বর্তমান সংকট সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। আর রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার অধিকারও দিতে হবে। তা না হলে অন্যরা এতে সুযোগ নেবে। এখন সে জন্যই বিএনপি টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে নানা স্থানে বোমা হামলার কথা স্বীকার করছে না। তারা বলছে, আমরা সহিংস রাজনীতি করছি না। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চাই।

সাংবাদিক শোভন আরেফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্চালক জানতে চান, ‘এখন যে অবস্থায় দেশ চলছে, তাতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। তাঁরা তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য রক্ষায় রাস্তায় নেমে এসেছেন। তাঁরা জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় মানববন্ধন করেছেন। কিন্তু এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হওয়ার জন্য আর কী করা উচিত?’

জবাবে কাজী আকরাম বলেন, ‘দেখুন, রাজনীতি আর ব্যবসানীতি বলতে কিছু বুঝছি না। সমস্যাটা যেই ব্যক্তি বা দল থেকে শুরু হয়েছে তাদের আগে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে আমরা তো সরকারকে এ সমস্যা নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। সরকার তো চাইছে, এটার যেন সমাধান করা যায়। কিন্তু আজকে যারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা করছে তাদের আগে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। মানুষ যেখানে আতঙ্কে আছে, সেখানে সরকার জনগণকে আতঙ্কে রেখে কিভাবে আলোচনা করবে? আবার কার সঙ্গে আলোচনা করবে- সেটাও তো এখন দেখার বিষয়।’

কাজী আকরাম আরো বলেন, ‘সহিংসতা দিয়ে কোথাও কখনো সরকারকে সরানো যায়নি। এখন যারা সহিংসতা করছে তারাও পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আর আমরা যদি দেখি বিএনপি তাদের বর্তমান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এবং সরকারকে সময় দিয়েছে যে আচ্ছা আমরা তিন বা ছয় মাসের জন্য অবরোধ-হরতাল করব না, সরকার আমাদের সঙ্গে কথা বলুক, তখন হয়তো আমরা সরকারকে বলতে পারি তারা যেন একটি আলোচনার বিষয় খতিয়ে দেখে। অথবা সামনে কিভাবে কোন পরিস্থিতিতে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করা যায়, তা নিয়ে তারা যেন পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এর আগে তো কারো সঙ্গে আলোচনা হতে পারে না।’

আলোচনার এ পর্যায়ে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, আসলে যাঁরা ভাবছেন বর্তমান সংকটে সরকারকে দুর্বল করে ফায়দা নেবেন তাঁরা ভুল পথে হাঁটছেন। আগে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরকে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তবেই সরকার আলোচনার কথা বিবেচনা করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তারাই দেশকে অস্থিরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রাজনীতিকে সন্ত্রাসের সঙ্গে এক করে ফেললে চলবে না। কারণ সব রাজনৈতিক দল সন্ত্রাস করছে এমনটা ভাবাই ঠিক হবে না। আমার মনে হয়, এ জন্য রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি না দেখে আগে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। তারপর হয়তো সরকারকে একটি আলোচনার উদ্যোগ নিতে বলতে পারে।’