ব্যাংকিং কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি থেকে কেন সরে এলেন অর্থমন্ত্রী? – মোস্তাফিজুর রহমান

Published in আমাদের সময় on Tuesday, 12 June 2018

আমাদের অর্থনীতি নিয়ে আমাদেরই ভাবতে হবে।  কীভাবে একটি টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায় সেদিকেই আমাদের মনোযোগ থাকা দরকার।  যে কোনো অসংগতি, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা গঠনমূলক সমালোচনা করি।  কেন করি? এই রাষ্ট্রটা যেন সবার হয়।  সব পক্ষের হয়। ধনী-দরিদ্র বৈষম্য না থাকে।  কেউ এককভাবে, অন্যায়ভাবে সম্পদ আহরণ না করতে পারে। আমরা জনগণের সম্পদক কেউ নিয়ে যাক চাই না। কেউ তা চাইতে পারে না। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকাভুক্ত হয়েছি, আমরা হয়তো একদিন কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাব। কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার পথে যে বাধাগুলো রয়েছে তা তো দূর করতে হবে। বিভিন্ন সেক্টরে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে দূরীকরণে তো আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাংক খাতের পরিস্থিতির কথাই ধরা যাক। কেমন আছে আমাদের ব্যাংকিং খাত? এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না কেমন আছে এই আর্থিক খাতটি। ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা আছে।  ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ থাকবে জাতীয় ঘোষণায়, আশা করেছিল সবাই। সেই ঘোষণা কি আছে বাজেটে?

সিপিডির পক্ষ থেকে আমরা বলেছি, একটা ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে। এবং সংসদে যাতে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হয়, ব্যাংকিং খাতের প্রতি যেন নজরদারি থাকে পার্লামেন্টের। ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য ‘ব্যাংকিং কমিশন’ গঠনের কথা তো মাননীয় অর্থমন্ত্রীও বলেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি তার আগের অবস্থানে নেই। কেন নেই জানি না। তবে আমার মনে হয়, ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে শক্তিশালী অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন। ব্যাংক খাতের বিশৃঙ্খলা, ব্যাংক তছরূপকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে এফবিসিসিআই যে একটা শক্ত অবস্থান নিল এবং সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ব্যাংক খাতের দুরাবস্থার কথা সুনির্দিষ্টভাবে বললেন, এটা খুবই ইতিবাচক। আমরা তো অনেকদিন ধরেই বলছি, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটা বিশৃঙ্খলা চলছে। অর্থনীতির জন্য এটি এত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত বা এলাকা যে সেখানে বিশৃঙ্খলা পরবর্তীতে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির যে ধরনের অগ্রগতি হয়েছে তার সবটাকেই একটা সংকটের মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

দুর্নীতি দমন কমিশনও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছে সেগুলো আরও শক্তিশালী করে বিচারাধীন যেগুলো আছে দ্রুত নিষ্পত্তি করে ব্যাংকিং সেক্টরে উপরে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।


অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সন্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ।