Published in Amader Orthoniti on Thursday, 4 June 2015.
গতিশীলতার বাজেট আজ
আকার হতে পারে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১১০ কোটি টাকার
বিশ্বজিৎ দত্ত ও হাসান আরিফ : অর্থনৈতিক বিচারে চলতি অর্থবছর খুবই ভালো গেছে সরকারের। মূল্যস্ফীতি ছিল নিচের দিকে, ব্যাংকসুদের হার কমেছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় রেট ছিল স্বাভাবিক, বাজেট ঘাটতি ছিল সীমার মধ্যেই। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ছিল পজেটিভ। তারপরও চলতি অর্থবছরে সরকারের সার্বিক পরিকল্পনা ছিল এলোমেলো। রাজনৈতিক অস্থিরতায় কাটাতে হয়েছে বেশিরভাগ সময়। ঘোষিত মেগা প্রকল্পগুলোর কাজের অগ্রগতি হয়েছে সামান্য। বেসরকারি সংস্থা সিপিডির হিসাবে এই প্রকল্পগুলোর গড়ে কাজ হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ। কাজ দেরি হওয়ায় প্রকল্পের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোপরি সরকারের রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করেতে হয়েছে। যার সুদ আগামী বছর দিতে হবে সরকারকে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, প্রথমবার সরকার ক্ষমতায় এসে যেভাবে পরিকল্পনা করে উন্নয়ন কাজগুলো শুরু করেছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্ষমতায় এসে কাজগুলোকে এলোমেলো করে দিয়েছে। আগামী বছরের বাজেটের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে এলোমেলো অবস্থা থেকে বের হয়ে অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলোকে গোছানো।
আজ বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনে বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ২ মেয়াদে ১০ বছরে এটি হবে সপ্তম বাজেট। আর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নবম বাজেট। আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট হতে পারে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার। এরমধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য এনবিআর নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা করা হতে পারে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। নন এনবিআর ও ননট্যাক্স রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কল্যাণকর একটি বাজেটের কাঠামো গঠন করা হয়েছে। অতি দরিদ্র, দরিদ্র, নারী, বেকার, শিশু ও বৃদ্ধ সবাই যাতে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আসে এই লক্ষ্য নিয়ে বাজেটটি তৈরি হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ মানুষকে। এর জন্য আগামী বাজেটে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৩৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই ৩ কোটি মানুষকে ৩ পর্যায়ে আনা হবে সামাজিক সুরক্ষায়। আগামী বছরই সুরক্ষার আওতায় থাকবে প্রায় পৌনে ২ কোটি মানুষ। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম জানান, আমাদের কাছে স্টাডি রয়েছে সরকারের সামাজিক সুরক্ষার প্রায় ২৭ শতাংশ চলে যায় ধনীদের কাছে। বাজেটে আমরা এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে কাজ করছি। সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা যাতে যথাযথ মানুষটির কাছে পৌঁছে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বাজেটে। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকই রাষ্ট্রীয় সুবিধা পায় তার জন্য লাইফ টাইম পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বণ্টনের লিকেজগুলো সিস্টেমের মাধ্যমেই অপসারণ করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারের সুরক্ষা সিস্টেম ৫টি পর্যায়ে কাজ করবে। ৪ বছরের নিচে দেশের সব শিশুদের পরিচর্যা ও পুষ্টির জন্য ৮০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। শুধু একটি পরিবারের দুটি সন্তানের জন্যই এই ভাতা বরাদ্দ থাকবে। পরে স্কুলে যায় এমন শিশু ১৮ বছর পর্যন্ত প্রত্যেককে ৩০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। ১৯ থেকে ৬৯ পর্যন্ত বয়সী মানুষদের বিভিন্ন বিমা পলিসির আন্ডারে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এসব পলিসিগুলো হবে চিকিৎসা, বেকার থাকার সময় প্রণোদনা, মাতৃত্বকালীন বিমা, দুর্ঘটনা বিমার মাধ্যমে। বেকার বিমার সময় প্রত্যেকে একটি ভাতা পাবে। ৬০ বছর থেকে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক ৩ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এর বাইরে রাষ্ট্রীয় পরিবহনে তারা বিনা ভাড়ায় চলাচল করতে পারবেন।
৩ পর্যায়ে বাস্তবায়িত এ সুরক্ষার প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ আগামী বছর পেনশন স্কিমের সুবিধায় আসবে ৫৫ লাখ বৃদ্ধ। ২০ লাখ শারীরিক অক্ষম ব্যক্তি। ৭৫ লাখ ৪ বছরের নিচের শিশু। ১ কোটি ৮০ লাখ স্কুলের শিশু ও ৩২ লাখ যুবক।
আগামী বাজেটে সবচেয়ে বড় চমকটি হবে সশস্ত্র টেক্সগার্ড বাহিনী গঠন। রাজস্ব আদায়কে গতিশীল করা ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় এই বাহিনী গঠন করা হবে। বাজেট অধিবেশনে টেক্সগার্ড বাহিনী গঠনের বিষয়টি বিল আকারে উপস্থাপন করা হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আলাদা একটি ব্যাংকের ধারণা বাজেটে রাখা হতে পারে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, কর আদায়ে রাজস্ব কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক তল্লাশি করে থাকে। এ কাজে সহায়তা নিতে হয় পুলিশ অথবা অন্যকোনো বাহিনীর। এতে সময় ও গোপনীয়তা দুটিই নষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে তল্লাশির সময় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এই বাহিনী এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণেও সহায়তা করবে।
টেক্সগার্ড বাহিনী এ কাজেও কর্মকর্তাদের সহায়তা করবে। মানি লন্ডারিং, ট্রান্সফার প্রাইসিং ও আর্থিক বিষয়ের গোপন সংবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করবে টেক্সগার্ড বাহিনী। প্রয়োজনে রাষ্ট্রের অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গেও তারা কাজ করবে। এটি অনেকটা হবে কোস্টগার্ড বাহিনীর আদলে।
এর বাইরে এবারের বাজেটে সরকারের রাজকোষ নীতির তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই জানিয়েছেন রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আগামী বাজেটে প্রতিষ্ঠান এবং পণ্যভেদে কর হারের কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। বাড়ছে ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের নিুসীমা। একইভাবে ৪৫০ পণ্য থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা থাকতে পারে। তবে পোশাক ও অন্যান্য খাতে উৎসে কর বাড়ছে।
করপোরেট করহার : নতুন অর্থবছরে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিকপ্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর কমছে আড়াই শতাংশ। আগামী অর্থবছরে পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির (পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি রয়েছে) বিদ্যমান করহার ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাংক, বিমা ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের (মার্চেন্ট ব্যাংক ছাড়া) ওপর বিদ্যমান কর ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে পাবলিকলি ট্রেডেড ও নন-পাবলিকলি ট্রেডেড সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানির ওপর থাকা বিদ্যমান করহার কমানো হচ্ছে না।
করমুক্ত আয়সীমা : ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বর্তমানের ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের আয়করের এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতাদের ন্যূনতম করের পরিমাণও বর্তমানের ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হচ্ছে। শুধু ব্যক্তি-শ্রেণির কারদাতাদেরই নয়, মহিলা ও বয়স্ক করদাতাদের এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের আয়করমুক্ত সীমাও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে নারী ও ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা রয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আগামী অর্থবছরে এটিকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকায় উত্তীর্ণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বিদ্যমান ৩ লাখ ৫০ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বিদ্যমান ৪ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
সিমট্যাক্স : নতুন বাজেটে সিমট্যাক্স আরো বাড়ছে। এতে গ্রাহকদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ সিমট্যাক্স দিতে হয় মোবাইল অপারেটরদের। বর্তমানে সিমপ্রতি ট্যাক্স ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলা নিয়ন্ত্রণেও নতুন কর বসছে। নতুন বছরে একনাগাড়ে ৫ মিনিটের বেশি কথা বললে একটি নির্দিষ্ট অংকের ভ্যাট দিতে হবে।
সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার : নতুন ভ্যাট আইনে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ উঠে যাচ্ছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের কথা বলবেন অর্থমন্ত্রী। এজন্য মাত্র ১৭০টি পণ্য রেখে বাকি সব পণ্য থেকেই প্রত্যাহার করা হবে সম্পূরক শুল্ক। চলতি অর্থবছরে ৭৭০টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয় শিল্পের সহনীয় ক্ষমতা বিচেনায় রেখে অসম ট্যারিফ যৌক্তিককরণের স্বার্থে অর্থমন্ত্রী আরো ৪৫০ পণ্য থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন বলে জানা গেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধিবিধান মেনেই সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
তৈরি পোশাকে উৎসে কর : তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানির ওপর উৎসে আয়কর বাড়ানো হচ্ছে। তৈরি পোশাক মালিকদের আপত্তি উপেক্ষা করে আগামী বাজেটে এ শিল্পে উৎসে কর কার্যকরের ঘোষণা দেবেন অর্থমন্ত্রী। রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে এখন তৈরি পোশাকশিল্পে উৎসে কর কর্তন করা হয় শূন্য দশমিক ত্রিশ পয়সা। এর বাইরে অন্যান্য রপ্তানি খাতে এই করহার শূন্য দশমিক ষাট পয়সা। নতুন বাজেটে পোশাক খাতের উৎসে কর বিদ্যমানের চেয়ে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৮০ পয়সা ও অন্যান্য খাতে এক টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।
সিগারেট-বিড়ির কর বাড়বে : আসন্ন বাজেটে নিু আয়ের মানুষের ব্যবহƒত বিড়ি, তামাক ও গুলের ওপরও কর বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যমান কর হারের চেয়ে আগামী কর প্রায় দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে সব ধরনের সিগারেটের মূল্যস্তর পরিবর্তন করে সম্পূরক শুল্ক আরো বাড়ানো হচ্ছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ঠিক করা হয়েছে ১ লাখ ৯৯৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের প্রকল্প রয়েছে ৩ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। সেটি বাদ দিলে এডিপি হচ্ছে ৯৭ হাজার কোটি টাকা। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে গোটা বাজেটের আকারই ছিল ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ দশমিক ১ শতাংশ, আর ঘাটতি হতে পারে ৮৮ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ৩০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে সরকারকে। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে করতে হবে ৫৫ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে আসবে ৩৮ হাজার ৩০৩ কোটি ও সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ১১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হচ্ছে। এর মধ্যে এনবিআর-নিয়ন্ত্রিত রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য থাকবে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা।
আয়কর থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করতে চায় এনবিআর। আদায়ের লক্ষ্য ৬৫ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা। মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায় ধরা হচ্ছে ৬৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এছাড়া আমদানি, রপ্তানি, আবগারি, সম্পূরকসহ সব ধরনের শুল্ক থেকে আসবে ৪৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। এনবিআর-বহির্ভূত আদায় ও বিভিন্ন ফি মিলিয়ে ৩৫ হাজার এবং বৈদেশিক অনুদান হিসাবে আসবে আরো ৭ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী ৭ অথবা ৭ দশমিক ১ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, আগামী বাজেটে ভর্তুকি ধরা হচ্ছে ২৪ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ খাতের বরাদ্দ ২৭ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা থেকে যা ২ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা কম।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে আসায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বর্তমানে লাভ করছে। তারপরও এ খাতে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে ৮০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ভর্তুকি ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা কমিয়ে ৬০০ কোটি টাকা করা হয়। বাজেটে সরকারি চাকরেদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণের সুপারিশ রয়েছে। আগামী বাজেটে বেতন বৃদ্ধির অংশটুকু বাস্তবায়িত করার চিন্তা রয়েছে সরকারের। ভাতা বাড়ানো হবে পরের বার। বর্তমানে মূল বেতনের ওপর আয়কর দিতে হলেও ভবিষ্যতে তাদের তা দিতে হবে ভাতার ওপরও।
ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে, যেগুলোতে ১৪ হাজার মানুষ বসবাস করে। ছিটমহলবাসীদের জন্য বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি নির্মাণে সহায়তা করবে সরকার। বাজেটে এ বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা থাকবে।
সম্পাদনা : আলাউদ্দিন