Looking Back: CPD Research Director at BBC Dialogue on Rana Plaza collapse

Reblogged from BBC Bangla website, report published on 28 April 2013. Watch the dialogue on Youtube.

সাভার ট্র্যাজেডির জন্য দায়ীদের বিচার হবে কি?

(left) Panellists: Mr HT Imam - Prime Minister's Adviser on Public Administration Affairs; Member of the Advisory Council of Awami League; Dr Fahmida Khatun - Research Director of Centre for Policy Dialogue (CPD), one of the country's leading think-tanks; Mr Md Atiqul Islam - President of Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) and Mr MK Anwar - Member of the National Standing Committee of BNP; Former Commerce Minister.
(left) Panellists: Mr HT Imam, Prime Minister’s Adviser on Public Administration Affairs; Member of the Advisory Council of Awami League; Dr Fahmida Khatun, Research Director of Centre for Policy Dialogue (CPD); Mr Md Atiqul Islam, President of Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) and Mr MK Anwar, Member of the National Standing Committee of BNP; Former Commerce Minister.

 

প্যানেল সদস্য বাঁ থেকে: প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সিপিডি’র গবেষনা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, অনুষ্ঠান সঞ্চালক আকবর হোসেন, বিজিএমইএর সভাপতি মো: আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার।

বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা নামের ভবন বিধ্বস্ত হয়ে যেভাবে শতশত মানুষ নিহত হয়েছে সেটির বিচারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।

এইচ টি ইমাম বলেন , ‘আমি একশ ভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি বিচার হবেই’।

অন্যদিকে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার বলেন, ‘আমি একশ ভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারি এ ঘটনার কোন বিচার হবে না’।

 

সাভার ট্র্যাজেডির বিচার প্রসঙ্গে

“আমি একশ ভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি বিচার হবেই”
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম

অনুষ্ঠানে মোঃ ইয়াকুব আলী নামে একজন দর্শক প্রশ্ন করেন, রানা প্লাজা ধসের কারণে যে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার দায়-দায়িত্ব আসলে কার?

বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন বিধ্বস্ত ভবনে যেসব পোশাক কারখানা ছিল সেগুলোর মালিকদের যেমন দায় আছে তেমনি ভবন মালিকেরও দায় আছে।

মি: ইসলাম বলেন, “ভবনের মালিককে ফাটল প্রসঙ্গে জানানো হলেও তিনি পৌরসভার প্রকৌশলী দেখিয়ে নিশ্চিত করেন যে ভবনটি ঠিক আছে। ভবনের মালিকের কথাতেই গার্মেন্টস মালিকরা ফ্যাক্টরি খুলেছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “কেন মালিক বলল যে বিল্ডিংটি নিরাপদ আছে? কার দায় কতটুকু সেটা সমানভাবে নিরূপণ করতে হবে।”

বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার বলেন, দেশে আইনের শাসন না থাকার কারণেই এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।

মি: আনোয়ার বলেন, “আইনের শাসন থাকলে, আইনই বলে দিবে কি দায়িত্ব, কার দায়িত্ব। এই দায়িত্ব সরাসরি সরকারের এবং বিজিএমইএর। কারণ এ দুটি সংস্থাই ফ্যাক্টরির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।”

উত্তরে মিঃ আনোয়ার বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার কারণে এই শিল্পের উপর সরকার নির্ভরশীল বলেই সব সরকারই এই শিল্পকে সহানুভূতির সাথে ত্রুটি বিচ্যুতি হালকা করে দেখেছে।

এ প্রসঙ্গে দর্শকরা মত দেন যে সব পক্ষেরই সমান দায়-দায়িত্ব আছে।

একজন দর্শক বলেন, “দায়িত্ব সরকার, বিজিএমইএ এবং ভবন মালিক, তিনজনের উপরই বর্তায়, এবং এর মূল কারণ হচ্ছে মূল্যবোধের অভাব। তিন পক্ষের ভেতরই মূল্যবোধের অভাব রয়েছে যেকারণে এটা ঘটছে”।

 

সাভার ট্র্যাজেডির বিচার প্রসঙ্গে

“আমি একশ ভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারি এ ঘটনার কোন বিচার হবে না।”
বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার

একই প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এর পেছনে দায়ী একটি ভঙ্গুর শাসনব্যবস্থা।

সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সাথে কারখানার মালিকের দায়িত্বও রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন দেশে আইনের শাসন বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

সংলাপে উপস্থিত দর্শকদের বেশিরভাগই মনে করেন অতীতের মতো এবারও রানা প্লাজা বিধ্বস্তের ঘটনায় কোন বিচার হবেনা।

কিন্তু এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, “অতীতে বিচার হয়নি বলে যে এবার বিচার হবেনা এমন কোন কথা নেই।”

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে গ্রেফতার নিয়ে সরকারের মধ্যে কোন দ্বিধা নেই। উল্লেখ্য রানা প্লাজা নামের ভবনটির মালিক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের যুব সংগঠন যুবলীগের একজন নেতা বলে অভিযোগ উঠেছে।

এইচ টি ইমাম বলেন ভবনের মালিক যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য দেশের সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশ সংলাপের দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল , ধনী দেশগুলোর ক্রেতাদের সস্তায় কাপড় দেবার লক্ষ্যে বাংলাদেশের গরীব শ্রমিকদের স্বার্থ আর কতাদিন উপেক্ষিত হবে?

 

 

 

 

 

“একের পর এক এ ধরনের দূর্ঘটনায় রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে”
সিপিডি’র গবেষনা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন পুঁজি-ভিত্তিক ব্যবস্থায় মুনাফার খাতিরেই এই অবস্থা তৈরি হয়। এর মাঝে শক্তিশালী পক্ষের জোরটাই বেশি থাকে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন , “ শ্রমিক আন্দোলনও এখন রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভাল কারখানাও যে নেই তা নয়, তবে যেগুলো দৃষ্টিগোচর হয়না তাদের উদ্দেশ্য থাকে স্বল্প-বেতনে কিভাবে বেশি উৎপাদন করা যায়।”

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, “এই লাশের পর লাশ আমরা চাই না। চাইলে এখনকার এই বিশ বিলিয়ন ডলারের যে ব্যবসা তা অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত”।

বাংলাদেশ সংলাপের দর্শকরা এ প্রসঙ্গে বলেন যে শ্রমিকরা আসলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাজ করে।

এর মাঝে একজন দর্শক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য থাকে বিদেশী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা। যখন বিদেশী ক্রেতা আসে তখন তদারকি করার জন্য বা শ্রমের পরিবেশ দেখার জন্য, ঠিক সেদিনই গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে মাস্ক দেয়া হয়, এপ্রোন দেয়া হয়।

পরবর্তীতে কি অবস্থায় আছে সেটার কোন তদারকি করা হয়না। মূলত বিদেশীদের কিভাবে আকৃষ্ট করা যায় সেটিই মালিকপক্ষের মূল লক্ষ্য থাকে”।

“কেন মালিক বলল যে বিল্ডিংটি নিরাপদ আছে? কার দায় কতটুকু সেটা সমানভাবে নিরুপণ করতে হবে। ”
বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বিদেশী ক্রেতারা যেখানে সস্তায় পান সেখানেই যান। এ কারণেই অনেকেই চীন বা ভিয়েতনাম থেকে অনেকে বাংলাদেশে এসেছেন বলে উল্লেখ করেন এইচ টি ইমাম।

তিনি বলেন , নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শ্রমিকের স্বার্থ যাতে উপেক্ষিত না হয় সেজন্য সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

একই প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার বলেন, বিগত দিনগুলোতে অনেক কারখানার যন্ত্রপাতি ও পরিবেশের উন্নতি হলেও শ্রমিকদের মজুরী ও জীবনযাত্রার মান কতটা উন্নত হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এম কে আনোয়ার বলেন , “ সরকার, ট্রেড ইউনিয়ন ও বিজিএমইএ এ তিনটি সংস্থারই এখানে আইনগত দায়দায়িত্ব রয়েছে। কেউই সেটা শ্রমিকদের পক্ষে ব্যবহার করেননি।”

তিনি বলেন রপ্তানি বাড়াতে যে ছাড় দিতে হয়েছে তা শ্রমিকদের মজুরী থেকেই এসেছে। মি: আনোয়ার বলেন পশ্চিমা বিশ্বে বাজার যেমন ধরে রাখতে হবে তেমনি শ্রমিকদের স্বার্থও দেখতে হবে।

তৃতীয় প্রশ্নটি করেন তানভীর আরেফিন নামে একজন দর্শক।তিনি জিজ্ঞেস করেন , পোশাকখাতে একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনার পর পশ্চিমা বিশ্বে রপ্তানির সুবিধার ক্ষেত্রে কি প্রভাব পড়বে?

sanglap audience
বাংলাদেশ সংলাপে প্রশ্ন করছেন একজন দর্শক।
গবেষণা সংস্থা সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি মনে করেন পশ্চিমা বিশ্বের বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবার কারণে সে বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ।

ফাহমিদা খাতুন, “একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনায় রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে”

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সরাসরি কোন উত্তর না দিলেও তিনি বলেন গণমাধ্যম এই ঘটনা যেভাবে ফলাও করে প্রচার করছে তাতে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে।

“দায়িত্ব সরকার, বিজিএমইএ এবং ভবন মালিক, তিনজনের উপরই বর্তায়।”

এ পর্যায়ে একজন দর্শক যিনি নিজেও একটি পোশাক কারখানার মালিক তিনি এর প্রভাব সম্পর্কে বলেন, “আমরা ফ্যাক্টরি চালু রাখতে পারছি না। বায়ারদের সাথে আমাদের শিপমেন্টের একটা কমিটমেন্ট থাকে যেটা আমরা পূর্ণ করতে পারছি না। এমন অবস্থায় কাউকে দোষারোপ না করে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এর মোকাবেলা করতে হবে।”

আরেকজন দর্শক মন্তব্য করেন, “তাজরীন ফ্যাশনস এবং রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির পর আশংকা করা যায় যে বিদেশী ক্রেতারা আমাদের প্রতিযোগী দুটি দেশ ভারত ও চীনে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নিতে পারে।”

তবে বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন এ বিষয়ে মোটামুটি একই রকম মতামত দেন।

বিএনপি নেতা এমকে আনোয়ার বলেন স্বল্প মেয়াদে এর প্রভাব পড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে এর তেমন কোন প্রভাব পড়বে না বলে তিনি আশা করেন।

এইচ টি ইমাম বলেন , “ স্বল্প মেয়াদে কিছু একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট হবে। যেমন এখান থেকে হয়তো মায়ানমারে যাবার চেষ্টা হবে কিংবা কিছু হয়তো ভিয়েতনামে যাবে।”

কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর কোন প্রভাব হবেনা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, এর কারণ হল বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে গুনগতমানের উন্নতি হয়েছে।

sanglap24 audience
বাংলাদেশ সংলাপের ২৪তম পর্বে অংশ নেয়া দর্শকদের একাংশ।
সেজন্য বাংলাদেশে শ্রমিকদের যাতে নিরাপত্তা বাড়ে সেজন্য বিদেশী বড় কোম্পানিগুলো আরও এগিয়ে এসে কাজ করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এদিকে বাংলাদেশ সংলাপে বেশিরভাগ দর্শক মনে করেন পশ্চিমা বিশ্বে সস্তায় রপ্তানি করে বাজার ধরে রাখার জন্য শ্রমিকদের স্বার্থের দিকে একেবারেই নজর দেয়া হচ্ছে না।