Dr Khondaker Golam Moazzem on compensation issues following Rana Plaza tragedy

Published in The Daily Ittefaq and Shokaler Khobor on Tuesday, 22 April 2014.

রানা প্লাজার ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণে সমন্বয়হীনতা
অ্যাকশন এইডের সংলাপে বক্তারা

ইত্তেফাক রিপোর্ট

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার এক বছর পার হলেও যথাযথ ক্ষতিপূরণ বা আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় দুর্ঘটনার ক্ষতিগ্রস্তদের বেশিরভাগেরই জীবন কাটছে আর্থিক কষ্টে। ক্ষতিপূরণে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সমন্বয়হীনতা এ জন্য দায়ী। রবিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে রানা প্লাজা নিয়ে আয়োজিত এক সংলাপে বক্তারা এমন অভিমত দেন। গবেষক, সরকারি প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা শ্রমিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি পরবর্তী এক বছরে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড পরিচালিত একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়। জরিপে বলা হয়, রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ৬৮ শতাংশ দৈনন্দিন জীবনের ব্যয়ের যোগান দিচ্ছেন অতি কষ্টে। এরমধ্যে প্রায় ৩ শতাংশ কোনভাবেই এই ব্যয় মেটাতে পারছেন না।

এ সময় বক্তারা রানা প্লাজা পরবর্তী এক বছরেও ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ শ্রমিক যথাযথ ক্ষতিপূরণ না পাওয়া হতাশা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ তহবিলের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। আবার সমন্বয়হীনতার কারণে কেউ একাধিকবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, অনেকে একবারও পাননি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা হয়নি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস রেড্ডি বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর এদেশের পোশাক কারখানার ভবন ও অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়কে পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদী হওয়া প্রয়োজন। যাতে আরো নিরাপদ কর্মসংস্থান হয় এ খাতে। তিনি বলেন, ওই দুর্ঘটনার পর অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি এসেছে। ত্রুটি চিহ্নিত করে কারখানার সংস্কার চলছে। এসবের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।

আইন ও শালিস কেন্দ্রের চেয়ারপার্সন ড. হামিদা হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে কে কত টাকা দিয়েছেন, কত টাকা ব্যয় হয়েছে সেসব তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত্। এই তহবিলে ১২৭ কোটি টাকা জমা পড়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। সব অর্থের স্বচ্ছতা থাকা দরকার।

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিকে কেন্দ্র করে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে তা ছিল বিক্ষিপ্ত। এসব উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয়হীতা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা রোধ এবং স্থায়ী পুনর্বাসনে দীর্ঘমেয়াদী কাঠামো প্রয়োজন। তিনি বলেন, এখনো অনেক অজ্ঞাত এবং নিখোঁজ রয়েছে। তারা শনাক্ত না হলে কিংবা ক্ষতিপূরণের বাইরে থেকে গেলে সেটা হবে বড় অমানবিক।

বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম রানা প্লাজা পরবর্তীতে মালিকপক্ষের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।

সংসদ সদস্য শিরিন আখতার বলেন, সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এবং শিশুসহ তাদের পোষ্যদের পুনর্বাসনে একটি ঐক্যবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদর জন্য স্থায়ী সমাধান হিসেবে আইন করা প্রয়োজনের কথা বলেন তিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর, শ্রমিক অধিকার সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের মহাসচিব রায় রমেশ চন্দ্র, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সহকারি নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Published in Shokaler Khobor

ক্ষতি পূরণ মেলেনি এক টাকাও

এসএম আলমগীর

সাভারের ভয়াবহ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। এই এক বছরে এখনও একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ পাননি হতাহত শ্রমিক ও তাদের স্বজনরা। সরকার, বিজিএমইএ এবং ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে যা দেওয়া হয়েছে সেগুলো অনুদান হিসেবে। কিন্তু আশ্বাস আর সভা-সেমিনারের মাধ্যমে বছর পার হলেও প্রকৃত ক্ষতিপূরণ এখনও পাননি ভুক্তভোগীরা।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) তথ্য মতে, গত বছরের ২৪

এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ওই ভবনের পাঁচ গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করা ৩ হাজার ৬৬৮ (মতভেদ রয়েছে) শ্রমিকের মধ্যে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ১৩৫ জন। জীবিত উদ্ধার ২ হাজার ৪৩৮ জন। এ ছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৯৫ জন। রানা প্লাজার ওই পাঁচ গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করা নিহত, নিখোঁজ ছাড়াও অন্য সব শ্রমিকও কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশনের (আইএলও) ১২১ ধারায় বলা হয়েছে, নিহত বা আহত শ্রমিকের পরিবারে তার ওপর যতজন নির্ভরশীল ছিল তার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এর ভিত্তিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত বিশেষ কমিটি নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আহত শ্রমিকদের জন্য ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু প্রকৃত এই ক্ষতিপূরণে আজও দেওয়া হয়নি একটি টাকাও।

এ প্রসঙ্গে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান সকালের খবরকে বলেন, সরকার, বিজিএমইএ, ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে রানা প্লাজার হতাহতদের যে অর্থ দেওয়া হয়েছে তা অনুদান। দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত হলে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে তার একটি টাকাও আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। অনুদান আর ক্ষতিপূরণ এক বিষয় নয়।

অপরদিকে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যেসব অনুদান দেওয়া হয়েছে সেগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে, যা মোটেই সমীচীন নয়।

বিলস-এর সহকারী নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমদ বলেন, আইএলও কনভেনশন ১২১ ধারা মতে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার সঙ্গে যুক্ত করে আরও থোক বরাদ্দ দিতে হবে। কেননা আইএলও কনভেনশনে নিহত শ্রমিকের যেসব স্বজনের কথা বলা হয়েছে তার বাইরে আরও অনেকেই ওই শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল থাকে। কোনো দুর্ঘটনায় ওই শ্রমিক নিহত হলে এই আইন মেনেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রানা প্লাজায় হতাহতদের বেলায়ও এভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ কারণে আমাদের দাবি হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটি নিহত শ্রমিকদের জন্য যে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার সুপারিশ করেছে তার সঙ্গে আর ৫ লাখ টাকা থোক বরাদ্দ রেখে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় রানা প্লাজা ধসের এক বছর হতে চললেও আজও ক্ষতিগ্রস্তরা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণ পাননি।

দেশি-বিদেশি অনুদান

জানা গেছে, রানা প্লাজা ধসের পর সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকারি তহবিলে এ পর্যন্ত অনুদান এসেছে প্রায় ১২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজনদের হাতে এ পর্যন্ত তুলে দিয়েছেন ২২ কোটি টাকা। বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়েছে ১৪ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে চিকিত্সা সহায়তা বাবদ ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাবদ ৭ কোটি ৬০ লাখ, প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে অনুদান ২ কোটি, প্রসূতি শ্রমিকদের সহায়তা ৪ লাখ ২০ হাজার এবং উদ্ধার কাজ ও পুনর্বাসনে ৯৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

রানা প্লাজার হতাহতদের সহায়তায় বিদেশি ক্রেতা বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ৪০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অনুদান জমা পড়েছে ১৭ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ৯ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। তার বাইরে অন্যান্য ক্রেতা ও সংস্থা মিলে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ট্রাস্ট ফান্ডে দিয়েছে। আবার এই তহবিলেও প্রাইমার্কের ১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা রয়েছে। আর্থিক সহায়তা দেওয়া মোট ১২টি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে-ব্রিটেনের প্রাইমার্ক, প্রিমিয়ার ক্লোদিং, বেঞ্চমার্ক, মাটালান, কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান লোবল, ডাচ প্রতিষ্ঠান সিএন্ডএ প্রভৃতি। কিন্তু বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা আমেরিকার ওয়ালমার্টসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। অথচ বাংলাদেশ থেকে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ২৩ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক কিনে কোটি কোটি ডলার মুনাফা করছে।

এ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ হারিয়েছে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে, কেউ হারিয়েছে স্বামী/স্ত্রী, কেউ সন্তান। আবার কেউ তার স্বজনের লাশ পর্যন্ত পাননি। আর যারা বেঁচে আছেন তারা প্রতিদিন সহ্য করছেন মরণ-যন্ত্রণা। আহত শ্রমিকরা এখনও প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিত্সা কেন্দ্রে। তাদের কারও আবার দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সার প্রয়োজন। কিন্তু তাদের সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সুস্থভাবে জীবনধারণ ও পুনরায় কাজে ফিরতে তাদের প্রয়োজন সঠিক চিকিত্সা ও পর্যাপ্ত সহায়তা।

কিন্তু শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ বা যথাযথ চিকিত্সা করার ক্ষেত্রে এতটা তোড়জোড় না থাকলেও মালিকদের স্বার্থের বিষয়টি যখন সামনে এসেছে তখন সে বিষয়গুলো সমাধান করতে বেশ তোড়জোড় করেছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। কারণ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক বয়কটের হুমকি দেয়। কারখানা ভবনের মানোন্নয়ন এবং শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। যার সিংহভাগই নেওয়া হয় গার্মেন্ট রক্ষার স্বার্থে বা মালিকদের স্বার্থে। গার্মেন্ট মালিকরা সবার আগে কারখানার মানোন্নয়নের দিকে নজর দেন। কারণ রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক নেওয়া বন্ধের হুমকি আসে ক্রেতাদের কাছ থেকে। এ কারণে গত বছরের ৪ মে বাংলাদেশ সরকার ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও)-এর যৌথ উদ্যোগে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান করা হয়। ১৩ মে অ্যাকর্ডের সঙ্গে চুক্তি করা হয়।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সবচেয়ে বড় আঘাত আসে গত বছরের ২৭ জুন। এ দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সে দেশে বাংলাদেশের পণ্যের জিএসপি (অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা) স্থগিত করে। এরপর ১০ জুলাই আমেরিকান ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যালায়েন্স। ১৫ জুলাই সরকার শ্রম আইন সংশোধন করে। এভাবে আরও অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। গার্মেন্ট মালিকরা এর সবই করেন নিজেদের রক্ষার জন্য।

শ্রমিকদের জন্য উল্লেখ করার মতো যেটা করা হয়েছে সেটা হল গত বছরের ২১ নভেম্বর ৭৭ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করে ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা। অবশ্য এর সঙ্গে রানা প্লাজার দুর্ঘটনাকবলিত শ্রমিকদের স্বার্থের কোনো বিষয় ছিল না।

এ প্রসঙ্গে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর মালিকদের স্বার্থগুলো যত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়েছে তত দ্রুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টির সুরাহা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “রানা প্লাজা যে ধরনের দুর্ঘটনা এবং এই দুর্ঘটনার কারণে শ্রমিকদের ওপর এর যে বহুমুখী প্রতিক্রিয়া সেটি আসলে এক মাস, দুই মাস, ছয় মাস বা এক বছরের সাহায্য-সহযোগিতার বিষয় নয়। এদের দীর্ঘমেয়াদি সাহায্য দরকার। কারও কারও জন্য হয়তো সারা জীবনের জন্যও সাহায্য প্রয়োজন। সে প্রেক্ষাপটে যে ধরনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা বা সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল সে জায়গাগুলোতে কিন্তু যথেষ্ট মাত্রায় পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।”

তবে এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সকালের খবরকে বলেন, “কোনো মানুষের জীবনের ক্ষতিপূরণ কোনো কিছু দিয়েই হয় না। তারপরও গত এক বছরে আমরা চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। তবে যতটা সহায়তার দরকার ছিল ততটা করা যায়নি। কারণ আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”

বিশ্ব গণমাধ্যমে আবারও রানা প্লাজা

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার এক বছর পূর্তিকে সামনে রেখে আবার বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছে রানা প্লাজা। নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, আলজাজিরাসহ বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যম এখন রানা প্লাজা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫০-এর অধিক সাংবাদিক বাংলাদেশে রয়েছেন। তারা রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্তদের এবং আমাদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলছেন। জানতে চাচ্ছেন রানা প্লাজার এক বছর পূর্তির আগে কী কী করা হয়েছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে যেন সঠিক চিত্রটি তুলে ধরা হয়।”