Dr Khondaker Golam Moazzem on energy price hike

Published in The Financial Express on Friday, 28 August 2015.

Power, gas price hikes evoke mixed reactions

Jasim Uddin Haroon

Economists and experts have expressed mixed reactions over the latest hike in electricity and gas prices.

Some of them argued that there are justifications for the price hike on the ground of substantial subsidy, being provided by the government, especially for the power sector.

Some others, however, opined that domestic consumers will bear the brunt of the tariff hike that came as a result of ‘imprudent’ government policies regarding power purchase from rental power plants.

But they are in agreement that the latest hike in electricity and gas tariffs has come as a shock, primarily for domestic consumers and small traders.

Bangladesh Energy Regulatory Commission (BERC) on Thursday increased the electricity tariff by 2.97 per cent and that of gas by 26.29 per cent for retail customers, effective from September 01.

Customers will pay Tk 600 and Tk 650 per month for single gas-burner and double gas-burners respectively.

At present, the tariff for single-burner is Tk 400, and Tk 600 for double-burners.

Dr M A Taslim, professor of Economics of University of Dhaka, said ultimately common people will have to bear the outcomes of rise in the government expenditure.

“There is an annual budget allocation for power plants. So the government has to realise the sum from the people.”

Dr Taslim said if the government continues encouraging rental power plants instead of large plants, subsidy for electricity will go up.

“If the subsidy for power production goes up, the common people have nothing to do but to pay.”

Instead of cutting cost of production and miscellaneous expenses of the state-owned power companies and the rental plants, the government is burdening common man to bear the cost, he added.

On the other hand, Dr Ahsan H Mansur, executive director of Policy Research Institute of Bangladesh (PRI), said the electricity tariff revision is minimum, and it will not affect the overall price level.

“In my view, it will have a dampening impact on inflation, as the existing rate of inflation remains high.”

“The rise in electricity prices can be accepted, if the government liabilities are considered.” Dr Mansur said gas prices in Bangladesh remained low than other countries.

Prices of liquefied petroleum gas (LPG) have been maintaining a high level in the country despite its price fall in the international market.

Khandker Golam Moazzem, additional director of Centre for Policy Dialogue (CPD), said the revision would not have emerged as a burden, if the government would reduce oil prices simultaneously.

“We think there is necessity for revision of gas prices. But if the government made downward adjustment in oil prices, there would not be any impact on common people.”

He said the government should make downward adjustment in oil prices in context of its price fall in the international market to reduce public woes.

On the other hand, Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry (FBCCI) in a statement hailed BERC for giving directives to the departments concerned to expedite giving power connections to the industrial units, which have long been waiting for it.


Published in Bhorer Kagoj

গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি : প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি কৃষি-শিল্প ও বাণিজ্য খাত। অথচ এসব খাতেই গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। **

টিটু সাহা : গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ফলে শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যয় ও কৃষিখাতে ব্যয় বেড়ে যাবে। ব্যয় বাড়বে বানিজ্যিক খাতেরও। ফলে বেড়ে যাবে নিত্যপণ্যের দাম। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রায়। গবেষক, বিশেষজ্ঞ এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবহারকারীরা এ আশঙ্কা করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন- সর্বশেষ গত বছরের মার্চে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় কৃষিতে বিদ্যুতের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও এবার বিদ্যুতের সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কৃষিতে। কৃষিতে প্রতি ইউনিটে (ফ্ল্যাট) ৩১ পয়সা বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন টাকা ৮২ পয়সা। শিল্প এবং বাণিজ্যেও বিদ্যুতের মূল্য ২৪ পয়সা করে বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে শিল্প ও বাণিজ্যে গ্যাসের মূল্য ইউনিটপ্রতি বাড়ানো হয়েছে যথাক্রমে ৮৮ ও এক টাকা ৮৯ পয়সা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি কৃষি-শিল্প ও বাণিজ্য খাত। অথচ এসব খাতেই গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আমাদের দেশে কৃষি উৎপাদনে তরল জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ দুটোই ব্যবহৃত হয়। সরকার কৃষিতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাই কৃষিতে এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে যেহেতু বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য কম তাই সরকার যদি দেশেও এর দাম কমিয়ে দেয় সে ক্ষেত্রে কৃষি উৎপাদনেও খরচ কমবে। ভারসাম্য তৈরি হবে। এদিকে বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারী ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি সালাম মোর্শেদী ভোরের কাগজকে বলেন, বছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অন্যান্য কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক। অন্যদিকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে এবং দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমছে। তাই এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সময়োপযোগী হয়নি। শিল্প ও বাণিজ্যে বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এ দুটি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন উদ্যোক্তারা পিছিয়ে যাবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে কৃষি খাতের গ্রাহক মূলত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং এসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এবার কৃষি খাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলেও আরইবি আওতাধীন এলাকায় কম বাড়ানো হয়েছে। তাই সার্বিকভাবে কৃষি খাতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

অন্যদিকে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে গ্যাস সম্পদ অত্যন্ত সীমিত। তাই এ জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারের জন্য দাম বাড়ানো জরুরি ছিল। তবে গ্যাসের দাম অন্য খাতে বাড়লেও সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়নি। তাই কৃষিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য বাড়লে বাড়তি অর্থ নতুন জ্বালানি সম্পদ খোঁজার কাজে ব্যয় করা হবে। পরে সে জ্বালানি শিল্পে ব্যবহার করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (ইআরসি) চেয়ারম্যান এ আর খান গাসের মূল্য বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, অন্য খাতে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে কারণ এই বাড়তি অর্থ গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে জমা হবে। এ অর্থ গ্যাস খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে। তবে বাড়তি এ অর্থ সুনির্দিষ্টভাবে কোথায় ও কীভাবে ব্যবহার করা হবে সে সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামছুল আলম বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ল, আবার সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে। এসবের প্রভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়বে। বিনিয়োগ আরো নিরুৎসাহিত হবে। বাড়বে মূল্যস্ফীতি। সব ধরনের গ্রাহককে এ দুটি খাতে বাড়তি ব্যয় করতে হবে। মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়বে।

বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, সব খাতেই বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। হিসাব কষে দেখা গেছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ার ফলে এখন থেকে একজন গ্রাহক ৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে সব চার্জসহ মাসে শোধ করতে হবে ১৩৩ টাকা। ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহার করলে মাসে মোট দিতে হবে ২৮৫ টাকা। এভাবে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহার করলে মাসে দিতে হবে মোট ৪১৪ টাকা, ১৫০ ইউনিটের জন্য ৬৭১ টাকা, ২০০ ইউনিটের জন্য ৯২৪ টাকা, ২৫০ ইউনিটের জন্য এক হাজার ১৯৬ টাকা, ৩০০ ইউনিটের জন্য এক হাজার ৪৬৪ টাকা, ৩৫০ ইউনিটের জন্য এক হাজার ৭৪৫ টাকা, ৪০০ ইউনিটের জন্য দুই হাজার ২৭ টাকা, ৪৫০ ইউনিটের জন্য দুই হাজার ৪৬২ টাকা, ৫০০ ইউনিটের জন্য দুই হাজার ৮৯৭ টাকা, ৫৫০ ইউনিটের জন্য তিন হাজার ৩৩২ টাকা, ৬০০ ইউনিটের জন্য তিন হাজার ৭৬৭ টাকা এবং এক হাজার ইউনিটের জন্য সাত হাজার ৭৫৯ টাকা মাসে বিল দিতে হবে।

রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার বাসিন্দা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, আমরা পরিবারে মোট সাতজন সদস্য। বাসায় দুটি টেলিভিশন, ৩টি ফ্যান, একটা কম্পিউটার, একটা ফ্রিজ চালানো হয় এবং চারটি লাইট জ্বালানো হয়। এতে আগের হিসাবে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হত। আবার নতুন করে দাম বাড়ায় আরো বাড়তি কত দিতে হবে আল্লাই জানেন। এভাবে জীবনযাপন করা দুঃসহ হয়ে উঠেছে।

রাজধানীর নাখালপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ নাসরিন আক্তার বলেন, গ্যাসের চুলায় একবারে ২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিদ্যুতের বিলও বাড়িয়েছে। টেলিভিশনের খবরে শুনি অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু এর সঙ্গে অনেক খরচও বাড়ছে সাধারণ মানুষের। তিনি বলেন, এর আগেও অনেকবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষরা কোথায় যাব সরকার তা ভাবে না।

সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এর আগে অবশ্য বিভিন্ন সভা সেমিনারে বলেছিলেন, সরকার সবার ঘরে ঘরে মানসম্মত ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। এ অবস্থায় প্রতি বছরই নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে উৎপাদনে আনতে হচ্ছে। ভবিষ্যতের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে আরো অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ জন্য অনেক জ্বালানি দরকার। জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। এর জন্য অর্থ সংস্থানের প্রয়োজন। তাই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো দরকার।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১০ সালের ১ মার্চ গ্রাহকপর্যায়ে ৫ শতাংশ, ২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাইকারিতে ১১ ও গ্রাহকপর্যায়ে ৫ শতাংশ, ২০১১ সালের ১ আগস্ট পাইকারিতে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর পাইকারিতে ১৬ দশমিক ৭৯ ও গ্রাহকপর্যায়ে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ, ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাইকারিতে ১৪ দশমিক ৩৭ ও গ্রাহকপর্যায়ে ৭ দশমিক ০৯ শতাংশ, ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাইকারিতে ১৬ দশমিক ৯২ ও খুচরা পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং সর্বশেষ গত বছরের ১৩ মার্চ খুচরা বিদ্যুতের দাম ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়ানো হয়।


Published in Bonik Barta

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানো হলো গ্যাস ও বিদ্যুতের। এ দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে গড়ে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। তবে গ্যাসের দাম বেড়েছে আরো বেশি গড়ে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগামী মাস থেকে বর্ধিত এ দাম কার্যকর হবে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াতে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গণশুনানির আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এর ছয় মাস পর গতকাল মূল্যবৃদ্ধির এ ঘোষণা দেয়া হলো। মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়ে বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো দরকার বলে শুনানিতে প্রস্তাব এসেছিল। অনেক কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্তগুলো আমরা নিয়েছি। গ্যাসের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও এত কম দামে গ্যাস পাওয়া যায় না।

গ্যাসের ক্ষেত্রে দুই বার্নারে (দুই চুলা) দাম বাড়ানো হয়েছে ২০০ টাকা। সমহারে বেড়েছে এক বার্নারের ক্ষেত্রেও। দুই চুলার ক্ষেত্রে গ্রাহককে মাসে ৪৫০ টাকা বিল পরিশোধ করতে হলেও  সেপ্টেম্বর থেকে তা বেড়ে হবে ৬৫০ টাকা। আর এক চুলার বিল হবে ৬০০ টাকা। এখন পরিশোধ করতে হয় ৪০০ টাকা। এছাড়া মিটারভিত্তিক ঘনমিটারপ্রতি দাম ৫ টাকা ১৬ পয়সা থেকে বেড়ে হচ্ছে ৭ টাকা।

বাসাবাড়ির পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দামও। বর্তমানে প্রতি ইউনিট সিএনজির মূল্য ৩০ টাকা থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা বেড়ে হবে ৩৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি ইউনিট সিএনজির দাম বাড়ছে ৫ টাকা।

চা বাগানে সরবরাহকৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসে মূল্য পরিশোধ করতে হয় বর্তমানে ৫ টাকা ৮৬ পয়সা। আগামী মাস থেকে তা বেড়ে হবে ৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ইউনিটপ্রতি ৮৮ পয়সা বাড়ানো হয়েছে শিল্পে ব্যবহূত গ্যাসে। বিদ্যমান ৫ টাকা ৮৬ পয়সা থেকে শিল্প-কারখানায় ব্যবহূত প্রতি ইউনিট গ্যাসের জন্য পরিশোধ করতে হবে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা। তবে আগের মতোই রাখা হয়েছে সার কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহূত গ্যাসের দাম। সার কারখানায় ব্যবহূত প্রতি ইউনিট গ্যাসে মূল্য পরিশোধ করতে হয় বর্তমানে ২ টাকা ৫৮ পয়সা ও বিদ্যুতে ২ টাকা ৮২ পয়সা।

সবচেয়ে বেশি ১০০ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টের গ্যাসের দাম। ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টগুলোয় ব্যবহূত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের জন্য এখন মূল্য পরিশোধ করতে হয় ৪ টাকা ১৮ পয়সা। সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে হচ্ছে ৮ টাকা ৩৬ পয়সা। আর বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বাণিজ্যিক ব্যবহারে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসে বর্তমানে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা মূল্য পরিশোধ করতে হলেও বর্ধিত হারে পরিশোধ করতে হবে ১১ টাকা ৩৬ পয়সা।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হলেও যৌক্তিক। কেননা গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। তবে বিদ্যুতের দাম জ্বালানি তেলের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে বাড়ালে যৌক্তিক হতো। কারণ বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেকাংশে কমেছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় স্বাভাবিকভাবেই কমবে।

এর আগে সর্বশেষ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ২০১৪ সালের মার্চে। সে সময় খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট-ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় গড়ে ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আর এবার গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ল গড়ে ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক হারে কমেছে।

গতকালের ঘোষণা অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে ১ থেকে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের জন্য নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ টাকা ৮০ পয়সা। ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিটের জন্য আগের ৫ টাকা ১ পয়সা (ইউনিটপ্রতি) থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ টাকা ১৪ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিটের জন্য ৫ টাকা ১৯ পয়সার পরিবর্তে ৫ টাকা ৩৬ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের ক্ষেত্রে ৫ টাকা ৪২ পয়সার স্থলে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা ও ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ৮ টাকা ৫১ পয়সার জায়গায় ৮ টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া ৬০০ ইউনিটের উপরে ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বিদ্যমান ৯ টাকা ৯৩ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ টাকা ৯৮ পয়সা। তবে লাইফলাইন (নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য) গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মূল্য আগের মতোই রাখা হয়েছে। এ শ্রেণীর (১ থেকে ৫০ ইউনিট) গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ইউনিটপ্রতি বিল শহরে ৩ টাকা ৩৩ পয়সা ও গ্রামে ৩ টাকা ৩৬ পয়সা।

রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে রফতানিমুখী শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে খাতটিতে। রফতানিমুখী শিল্প প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে উল্লেখ করে এ উদ্যোক্তা বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক দেশের তুলনায় আমরা পিছিয়ে পড়েছি। দেশগুলো যেখানে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি করেছে, আমাদের সেখানে নেতিবাচক।’

সেচপাম্পে ব্যবহূত বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে গতকালের ঘোষণায়। এক্ষেত্রে শহরাঞ্চলে সেচপাম্পে ব্যবহূত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ২ টাকা ৫১ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা। আর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ৩৯-৯৬ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা। সেপ্টেম্বরের বিলে বর্ধিত এ দাম গুনতে হবে গ্রাহকদের।

সামান্য বাড়ানো হয়েছে ক্ষুদ্র শিল্পে ব্যবহূত বিদ্যুতের দাম। এ খাতের ব্যবহূত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে বিদ্যমান ৭ টাকা ৪২ পয়সার পরিবর্তে আগামী মাস থেকে পরিশোধ করতে হবে ৭ টাকা ৬৬ পয়সা। অনাবাসিক বাতি ও বিদ্যুতে (দাতব্য, মসজিদ, মন্দির, ক্লাব ইত্যাদি) ৪ টাকা ৯৮ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ টাকা ২২ পয়সা। রাস্তার বাতির জন্য ৬ টাকা ৯৩ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ টাকা ১৭ পয়সা।

বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের (ফ্ল্যাট রেট) দাম ৯ টাকা ৫৮ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ টাকা ৮০ পয়সা। বৃহৎ শিল্পে (১১ কিলোভোল্ট) ৭ টাকা ৩২ থেকে বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ৫৭ পয়সা। ১৩২ কিলোভোল্টের ক্ষেত্রে ৬ টাকা ৯৬ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ টাকা ৩৫ পয়সা।

সরকারের গত মেয়াদে পাইকারি পর্যায়ে ছয় দফা বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ৪ টাকা থেকে ৫৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়। বছরে অন্তত একবার বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের নীতিগত অবস্থান নিয়েছে সরকার।


Published in Jaijaidin

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি
শঙ্কায় পোশাকসহ রপ্তানি খাত

এমনিতেই রপ্তানি খাত নানামুখী চাপে জর্জরিত। নতুন এ সিদ্ধান্ত সে চাপ আরো বাড়িয়ে দেবে। অন্যান্য শিল্প ও উৎপাদনমুখী খাতেও প্রভাব পড়বে। বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাও কঠিন হবে _ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ

আবু সাইম

শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকসহ সার্বিক রপ্তানিখাত। শিল্পের প্রধান এ দুই জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়ে যাবে জ্বালানি খাতের ব্যয়, বাড়বে উৎপাদন খরচ। আর এতে আন্তর্জাতিক বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়বে রপ্তানি খাত। একই সঙ্গে সক্ষমতা কমায় প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছে বাজার হারানোর আশঙ্কাও করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বৃহস্পতিবার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এতে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। আর বিদ্যুতে বেড়েছে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সিএনজি গ্যাসের দামও বেড়েছে ১৬ দশমিক ৬৬ শতংশ। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।

আর এমন ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী শিল্প সংশ্লিষ্টরা। তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ অভিযোগ করে বলেছে, সংগঠনটির মতামতকে মূল্যায়ন করেনি সরকার। রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সহ অন্যরাও এ সিদ্ধান্তে তাদের প্রবৃদ্ধি ধারাকে ব্যাহত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

রপ্তানিকারক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনিতেই দেশের রপ্তানির গতিতে তেমন জোর নেই। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেও প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। ইউরোর অস্বাভাবিক অবমূল্যায়নের সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক মন্দা। এসব কারণে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে অসম অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে। এতে রপ্তানি খাত অনকেটাই দিশাহারা। গ্যাস ও বিদ্যুতের নতুন করে দাম বৃদ্ধি উৎপাদন খরচকে আরো বাড়াবে। যা রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করবে। পাশাপাশি সব শিল্পে নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় রপ্তানি খাত নতুন করে চাপের মুখে পড়বে। এমনিতেই তা নানামুখী চাপে জর্জরিত। নতুন এ সিদ্ধান্ত সে চাপ আরো বাড়িয়ে দেবে। রাপ্তানি খাত ছাড়াও অন্যান্য শিল্প ও উৎপাদনমুখী খাতেও প্রভাব পড়বে। মুদ্রাস্ফীতিও বেড়ে যাবে। রপ্তানি বাড়ার গতিতে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কেননা, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে প্রতিযোগিতায় থাকাও কঠিন হবে। যদি রপ্তানি না বাড়ে তাও দেশের জন্য নেতিবাচক। আবার খরচ বাড়লে নতুন বিনিয়োগও কমে যাবে। মোটকথা এটা সবার জন্য খুব অস্বস্তিকর ব্যাপার হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অর্থনৈতিক মূল্য অনেক কম। তাই এর সমন্বয় প্রয়োজন ছিল। আবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের মূল্যও কমানো আবশ্যক ছিল। কিন্তু এখন শুধু অর্ধেক কাজ হয়েছে। তাই এতে তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী খাতসহ শিল্পোৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কেননা, শিল্পের প্রধান জ্বালানি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচও বাড়বে যা পণ্যের মূল্যও বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে যেহেতু রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য পরিবহন অপরিহার্য। তাই সরকার তেলের দাম কমিয়ে আনলে পরিবহন ব্যয়ও কমে আসবে। এতে শিল্প খাতের ব্যয় সমন্বয় হবে। ক্ষতিও তেমন হবে না।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে সামগ্রিক শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি পোশাক শিল্পসহ সার্বিক রপ্তানি খাত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে, এ খাতে নতুন বিনিয়োগ আরো কমবে।

তাই বিনিয়োগ ও রপ্তানি খাতের বর্তমান নিম্নমুখী অবস্থায় গ্যাস-বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত না করে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক দাবি করে তারা বলছেন, পণ্য উৎপাদনের জন্য শিল্পের অপরিহার্য দুটি উপাদান গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না থাকায় উৎপাদন ঠিক রাখতে এমনিতেই তাদের জ্বালানি তেলের পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। এর মধ্যে কমপ্লায়েন্স ইস্যুসহ নানা সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গার্মেন্ট কারখানা।

বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, পোশাক খাতের উৎপাদন খরচ বিগত দিনে ব্যাপক হারে বেড়েছে। এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে যাবে। এতে এ খাত প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। রপ্তানির বড় খাত পোশাক শিল্পেরও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমবে। অনেক সময়ই বিকল্প জ্বালানিতে জেনারেটর চালাতে হয়। কিন্তু সরকার তেলের দাম কমাচ্ছে না। অপরদিকে, বাড়াল গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম।

তিনি বলেন, সারকারে গণশুনানিতে দাম বাড়ালে তা সহনীয় মাত্রায় বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছি। কিন্তু সে মূল্যায়ন বা দাবি বিবেচনা করা হয়নি। এটা দুঃখজনক। তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে রপ্তানিকারকদের সংগঠন ইএবি বলছে, বিভিন্ন কারণে রপ্তানি নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের শুরুতেই (জুলাই মাসে) সার্বিক রপ্তানি বৃদ্ধি ১১.৯৬ শতাংশ ঋণাত্মক। পূর্ব থেকেই রপ্তানির বড় বাজার ইউরোজোনে ইউরোর অস্বাভাবিক অবমূল্যায়ন ও পণ্যের মূল্য হ্রাসে ব্যবসায়ীরা দিশাহারা। এ অবস্থায় এ সিদ্ধান্ত রপ্তানি খাতের ওপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

ইএবি আরো বলছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১১৪ ডলার থেকে নেমে ৩৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে প্রতিযোগী দেশগুলো বিশেষ করে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া একাধিকবার জ্বালানি খাতের দর কমিয়েছে। কয়েকটি দেশ ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে টাকা অতিমূল্যায়িত রয়েছে। ফলে, রপ্তানি খাত কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়ছে।

ইএবি সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, বর্তমান অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজার প্রেক্ষাপটে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়। মাত্রা শিল্প ও রপ্তানি খাত রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে। এ সময় এই সিদ্ধান্ত ওপর নতুন চাপ তৈরি করবে। রাজনৈতিক অস্থিরতার ক্ষতির পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুতের অপর্যাপ্ত সরবরাহ নিয়েও দীর্ঘদিনের অসন্তোষ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের। দাম বড় বিষয় হতো না যদি কোয়ালিটি গ্যাস-বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। যে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে তা পূর্ণ প্রেসারে পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুতে লোশেডিং বাড়ছে। তাই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।