সুশাসনের জন্য সংস্কারকাজ হলেও বাকিও রয়েছে অনেক কিছু। কেন্দ্রীয়ভাবে ন্যায়পাল নিয়োগের কথা ছিল। এমনকি স্থানীয় পর্যায়েও ন্যায়পাল নিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে। কিছুই হয়নি। ন্যায়পাল নিয়োগসহ সরকারি সেবা আইন প্রণয়ন এবং বাকি কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে।
while addressing Bangladesh Development Forum (BDF) on Sunday, 15 November 2015, published in Prothom Alo.
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের সভায় সুশাসন ও উন্নয়ন বিষয়ে অধিবেশনে আলোচনা
কথা বলার জায়গা রাখতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে সুশাসনের জন্য সুশীল সমাজের কথা বলার জায়গাটা বজায় রাখতে হবে। শক্তিশালী করতে হবে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) অন্য সংস্থাগুলোকে। আর সুশাসনের জন্য যেসব সংস্কারকাজ এখনো বাকি আছে, যত দ্রুত সম্ভব সেগুলোতে হাত দিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) প্রথম দিনের শেষ অধিবেশনে বক্তারা এমন অভিমত দেন। ফোরামের অধিবেশনগুলোতে উন্নয়ন-সহযোগীদের সামনে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
অধিবেশনে ‘সুশাসন ও উন্নয়ন: কার্যকর উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য অংশীদারত্ব শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
অধিবেশনটিতে নির্ধারিত আলোচক ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদো বলেন, সুশাসনের জন্যই দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। আর সুশীল সমাজ অনেক বিষয়ে কথা বলে; বলতে দেওয়া উচিত। সরকারকে এমন আচরণ করতে হবে, যাতে তাদের (সুশীল সমাজ) কথা বলার জায়গাটা থাকে। তথ্য অধিকার আইনের অধীনে তথ্য পাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আমাদের সামনে এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি)। এসডিজির চ্যালেঞ্জগুলো বাস্তবায়নে প্রযুক্তির হস্তান্তর বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুশাসনের জন্য সংস্কারকাজ হলেও বাকিও রয়েছে অনেক কিছু। কেন্দ্রীয়ভাবে ন্যায়পাল নিয়োগের কথা ছিল। এমনকি স্থানীয় পর্যায়েও ন্যায়পাল নিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে। কিছুই হয়নি। ন্যায়পাল নিয়োগসহ সরকারি সেবা আইন প্রণয়ন এবং বাকি কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হব, তাই নতুন কৌশল নিতে হবে। নমনীয় ঋণও তখন আমরা পাব না। বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মুনীর খসরু বলেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। এটা ভালো। কিন্তু এর লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের হার দুর্বল। এটি বাস্তবায়নেও উন্নয়ন-সহযোগীদের দরকার পড়বে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিউদ্দিন খান সুশাসনের জন্য নেওয়া সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
প্রবন্ধ: সুশাসনের জন্য গত কয়েক বছরে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র প্রণয়ন, মানবাধিকার কমিশন গঠন, সিটিজেন চার্টার করা, বার্ষিক চুক্তি সম্পাদন, জাতীয় সংসদকে শক্তিশালী করা, বিচার বিভাগকে আলাদা করা, ডিজিটালাইজেশন এবং ই-গভর্ন্যান্স করা হয়েছে বলে প্রবন্ধে তুলে ধরেন ইআরডি সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন।
এতে বলা হয়, উন্নয়ন-সহযোগীদের দেওয়া সহজ শর্ত বা নমনীয় ঋণের (ওডিএ) অর্থ অবকাঠামো উন্নয়ন, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, কর-ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ ইত্যাদিতে এত দিন ভালোই ব্যবহার হয়েছে। তবে নমনীয় ঋণের বিষয়ে এখন নতুন করে চিন্তা করতে হবে।