Published in Prothom Alo on Saturday, 1 August 2015.
ঋণের ৭৫ শতাংশই ফিরে যাবে ভারতে
জাহাঙ্গীর শাহ
২০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে কঠিন শর্ত দিয়েছে ভারত। এ ঋণে যে প্রকল্পই নেওয়া হবে, ভারত থেকে মালামাল এনে ওই প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ অর্থ খরচ করতে হবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতের এ শর্ত পূরণ করতে হলে নির্মাণকাজের সামগ্রী থেকে শুরু করে পরামর্শকও ভারত থেকে আনতে হবে।
গত জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে ২০০ কোটি ডলারের সমঝোতা চুক্তি হয়, যা দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটÜ (এলওসি) নামে পরিচিত। ভারতের এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক বা এক্সিম ব্যাংক এ ঋণ দেবে। এর আগেও ভারতের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই চুক্তির অর্থ ব্যবহারের শর্ত কিছুটা নমনীয় ছিল। তাতে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে ৬৫ শতাংশ এবং অন্য প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ কেনাকাটা ভারত থেকে করার শর্ত ছিল।
সমঝোতা চুক্তির সময় বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সহায়তার শর্ত আগের মতোই থাকবে। তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে এখন জানানো হয়েছে, এবারের ঋণের আওতায় নেওয়া যেকোনো প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ কেনাকাটাই ভারত থেকে করতে হবে। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিতে হবে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো দেশের প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নিতে পারবে না। এ মাসে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি করার আগ্রহ প্রকাশ করে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে চিঠি দিয়েছে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম এলওসিতে কেনাকাটার শর্তের কারণে বেশ কিছু কাঙ্ক্ষিত প্রকল্প নেওয়া সম্ভব হয়নি। গতবার প্রথমে শর্ত ছিল যে ৮০ শতাংশ কেনাকাটা ভারত থেকে করতে হবে, পরে তা কমিয়ে ৬৫ শতাংশ করা হয়। এবারের দর-কষাকষিতে তা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে এ ধরনের ঋণ অনেকটা সরবরাহকারী ঋণের মতো হয়ে যায়। তা ছাড়া এ ঋণের শর্ত মানলে কোন কোন প্রকল্প নিলে অপেক্ষাকৃত বেশি লাভবান হওয়া যাবে, হিসাব করে সেসব প্রকল্প বাছাই করতে হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে শর্তহীন ঋণ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। উন্নত দেশগুলো অনেকটা রাজিও হয়েছে। তাই ভারতের ঋণের ক্ষেত্রেও দর-কষাকষি করতে হবে।’
ভারতের ঋণের অর্থ দিয়ে ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে সরকার। প্রকল্পগুলো হলো রেল যোগাযোগ খাতের পার্বতীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথকে দ্বৈত গেজে রূপান্তর; খুলনা-দর্শনা দ্বিমুখী রেলপথ নির্মাণ; সৈয়দপুর রেল কারখানা উন্নয়ন; বিদ্যুৎ খাতের বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন নির্মাণ; পরিবহন খাতের বিআরটিসির ৫০০ ট্রাক কেনা; ৫০০ বাস (৩০০ দ্বিতল ও ২০০ আর্টিকুলেটেড) কেনা; সড়ক ও জনপদ বিভাগের জন্য যন্ত্রপাতি কেনা; চারটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপন; ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন; আশুগঞ্জ নৌ কনটেইনার বন্দর স্থাপন ও আশুগঞ্জ নৌবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। এ তালিকায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আরও দুটি প্রকল্প রয়েছে।
ভারতের শর্ত মেনে এসব প্রকল্প কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নিয়ে আগামী ২ আগস্ট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সভা করবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
ইআরডির অতিরিক্ত সচিব আসিফ উজ জামান প্রথম আলোকে বলেন, সভায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হবে। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করা হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শর্ত নমনীয় করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।
ভারতীয় ঋণে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এর অর্ধেকের বেশি পূর্ত কাজের প্রকল্প। ইআরডির সূত্র উদাহরণ দিয়ে বলেছে, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনের সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ২৩ কোটি ডলার দেবে ভারত। ভারতীয় ঠিকাদারকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে কমপক্ষে সোয়া ১৭ কোটি ডলার খরচ করতে হবে ভারতীয় মালামাল কিনে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রায় ৪৭ কিলোমিটার সড়কের পাশে ভারত থেকে মাটি, ইট, বালু, সিমেন্টের মতো উপকরণ ভারত থেকেই আনতে হবে। এমনকি শ্রমিকও আনতে হবে ভারত থেকে। কেননা, এই রাস্তা নির্মাণে যে ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে, তাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতেই ব্যয় হবে প্রকল্পের বাকি ২৫ শতাংশ অর্থ।
Published in Jugantor on Sunday, 2 August 2015.
২০০ কোটি ডলার ঋণ শর্তের বেড়াজালে লাভবান ভারত
মামুন আব্দুল্লাহ
ভারতের ২০০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুত ঋণ পেতে উচ্চ সুদসহ কঠিন শর্ত দিয়েছে দেশটি। শর্তানুসারে লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ঋণের অনুকূলে গৃহীত প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ পণ্য বা সেবা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান থেকে আনতে হবে। বাংলাদেশে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজের সুযোগ করে দেয়ার শর্তে এ ধরনের ঋণ, যা সরবরাহ করবে সে দেশের এক্সিম ব্যাংক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঋণ দিয়ে বস্তুত একতরফাভাবে লাভবান হতে চায় ভারত। কেননা ভারতের অনেক পণ্যই গুণগত মানসম্পন্ন নয়। তবুও অন্য কোনো দেশ থেকে গৃহীত প্রকল্পের অর্থ দিয়ে মালামাল ক্রয় করা যাবে না। ফলে এই এলওসির মাধ্যমে বাংলাদেশ কতটা লাভবান হবে এ নিয়ে ভালোভাবে রিসার্চ করা প্রয়োজন। আজ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে এ প্রতিশ্র“তির অনুকূলে গৃহীতব্য প্রকল্প নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে এ ঋণের জন্য ১৩টি প্রকল্প বাছাই করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ-সংক্রান্ত আলোচনার সময়ে বাংলাদেশকে এর শর্ত নিয়ে অধিক সতর্ক হতে হবে। এর আগে ভারতের ৮০ কোটি ডলারের ঋণের সময় যেসব শর্তকে সাধুবাদ জানিয়েছিল সরকার, পরে সেগুলোকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে কর্তৃপক্ষ। এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন মারাÍকভাবে পিছিয়ে পড়ে, বেড়ে যায় ব্যয়। প্রকল্পের মান বজায় রাখা নিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। তাদের মতে, কিভাবে ঋণের শর্ত আরও নমনীয় করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে বাংলাদেশকে। আগের জটিলতা পরিহারে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া উচিত। ভারতের নতুন ঋণ নেয়ার আগে এর ব্যবহার, সক্ষমতা, শর্ত প্রভৃতি সুষ্ঠুভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। নইলে অর্থনৈতিক উন্নতির বদলে চাপই বাড়বে, যা কাম্য নয়।
এ প্রসঙ্গে ইআরডির এশিয়া উইংয়ের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব আসিফ উজ জামান যুগান্তরকে বলেন, সভায় ভারতীয় ঋণের অর্থে কোনো প্রকল্প গ্রহণ ও নেগোসিয়েশনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হবে। এরপর নির্ধারণ করা হবে কোন প্রকল্পের আওতায় কি পরিমাণ সহায়তা বাংলাদেশ নেবে। তিনি বলেন, বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ঋণের শর্তের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সামনে এ বিষয়ে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে শর্ত চূড়ান্ত করা হবে।
ভারতের ঋণের অর্থ দিয়ে ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে সরকার। প্রকল্পগুলো হল রেল যোগাযোগ খাতের পার্বতীপুর-কাউনিয়া পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথকে দ্বৈত গেজে রূপান্তর; খুলনা-দর্শনা দ্বিমুখী রেলপথ নির্মাণ; সৈয়দপুর রেল কারখানা উন্নয়ন; বিদ্যুৎ খাতের বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন নির্মাণ; পরিবহন খাতের বিআরটিসির ৫০০ ট্রাক কেনা; ৫০০ বাস (৩০০ দ্বিতল ও ২০০ আর্টিকুলেটেড) কেনা; সড়ক ও জনপথ বিভাগের জন্য যন্ত্রপাতি কেনা; চারটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপন; ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন; আশুগঞ্জ নৌ কনটেইনার বন্দর স্থাপন ও আশুগঞ্জ নৌবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। এ তালিকায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আরও দুটি প্রকল্প রয়েছে।
জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে ২০০ কোটি ডলারের সমঝোতা চুক্তি হয়, যা দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) নামে পরিচিত। ভারতের এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক বা এক্সিম ব্যাংক এ ঋণ দেবে। এর আগেও ভারতের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে যার ২০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই চুক্তির অর্থ ব্যবহারের শর্ত কিছুটা নমনীয় ছিল। তাতে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে ৬৫ শতাংশ এবং অন্য প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ কেনাকাটা ভারত থেকে করার শর্ত ছিল।
সমঝোতা চুক্তির সময় বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সহায়তার শর্ত আগের মতোই থাকবে। তবে ভারতীয় পক্ষ থেকে এখন জানানো হয়েছে, এবারের ঋণের আওতায় নেয়া যে কোনো প্রকল্পে ৭৫ শতাংশ কেনাকাটাই ভারত থেকে করতে হবে। আর প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিতে হবে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
এর আগে ইআরডিতে সম্প্রতি প্রেরিত এক চিঠিতে ভারতের এলওসি ঋণের নতুন প্রস্তাব পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, এ ঋণের সুদ হার হবে গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ। কমিটমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট ফি হবে আলোচনা সাপেক্ষে। কেবল বিদ্যুৎ, আবাসন ও হাসপাতাল, পানি শোধনাগার, সড়ক, মূলধনী ও প্রকৌশলী এ পাঁচ খাতেই প্রকল্প নিতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকারকে এ ঋণের গ্যারান্টার হতে হবে। এসব শর্ত মেনে নিলে উভয় দেশের মধ্যে ঋণচুক্তি সই হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটি।
এলওসি ঋণের শর্তের মধ্যে ছিল- আট বছর বা এর কম মেয়াদে ঋণ নিতে চাইলে সুদহার হবে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক (লাইবর) রেটের সঙ্গে আরও ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। নয় থেকে ১২ বছর মেয়াদি ঋণ নিতে চাইলে এর সুদের হার হবে লাইবরের সঙ্গে আরও ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এছাড়া ১৩-১৫ বছর মেয়াদি ঋণের সুদ হার হবে লাইবরের সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ ঋণের সুদ হার হবে গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ১ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে এখনও বড় বিনিয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেখতে হবে সহজ শর্তে দাতা সংস্থা বা দেশগুলো ঋণ দেয় কিনা। যদি সহজ শর্তে পাওয়া যায় তবে বায়ার্স ক্রেডিটের দিকে না যাওয়াই উত্তম। ভারতের ঋণের বিষয়টিও একই রকম। প্রকল্প গ্রহণের পর তা থেকে কাঙ্ক্ষিত ও ফলপ্রসূ সুবিধা পাওয়া যাবে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। তিনি বলেন, এ অর্থে গৃহীত প্রকল্পে সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে ব্যয় বৃদ্ধি না করে মানসম্পন্ন পণ্য আনার নিশ্চয়তা থাকা উচিত। তা না হলে দায় বাড়বে কিন্তু জনগণের কোনো উপকার হবে না।
বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন বলেন, বায়ার্স ক্রেডিট বা এলওসি লোন নেয়া যাবে না তা নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে মানসম্পন্ন মালামাল নিশ্চিত হচ্ছে কিনা। যদি না হয় তাহলে বাংলাদেশের লায়াবিলিটিস (ঋণ) বাড়বে কিন্তু কোনো অ্যাসেট (সম্পদ) বাড়বে না।
জানা গেছে, ভারত যেসব পণ্য বাংলাদেশকে দেয় তা একেবারেই নিুমানের। রেল বা পরিবহনে তারা যে মানের পণ্য বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তার চেয়ে অনেক নিুমানের জিনিস বাংলাদেশে আসে। যেমন এর আগে যেসব বিআরটিসি বাস ভারত থেকে আনা হয়েছে, তার অনেকগুলো ইতিমধ্যে অকেজো হয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নতুন এলওসি ঋণের দরকষাকষিতে তা শর্ত সহজ করে আনার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে এ ধরনের ঋণ অনেকটা সরবরাহকারী ঋণের মতো হয়ে যায়। তাছাড়া এ ঋণের শর্ত মানলে কোন কোন প্রকল্প নিলে অপেক্ষাকৃত বেশি লাভবান হওয়া যাবে, হিসাব করে সেসব প্রকল্প বাছাই করতে হবে।