Editorials on CPD’s Recommendations for the National Budget FY2016-17

Published in New Age on Tuesday, 19 April 2016

CPD’s legitimate questions on BB reserve theft

LOCAL think-tank Centre for Policy Dialogue has raised a pertinent question over the country’s recent reserve theft. An economist working with the organisation at a press briefing in the capital Dhaka on Sunday questioned, as New Age reported on Monday, as to why neither the parliament nor the parliamentary standing committee concerned took any initiative to discuss the matter till date. Moreover, it is still unclear if the issue has even been included in the agenda of any cabinet meeting. All this, meanwhile, took place at a time when the Philippine parliament has already discussed the issue. It is important to note that people here came to know of the matter about two months after $81 million had been stolen from the Bangladesh Bank reserve deposited with the US Federal Reserve Bank, that too when a Philippine daily newspaper broke the news. Also, most of the information of the theft came from foreign sources such as the Philippines, US Fed and Switzerland.

No doubt, the amount of the stolen reserve is not so big compared with that embezzled by the Hallmark Group and the Bismillah Group, in particular, from different state-owned banks in the past few years. But there is nothing to differ with the CPD economist when he said that the theft brought to the fore a new risk that questions the existing quality of financial structure and its management and, thus, required special attention. It is also true that the central bank governor and some other high officials have had to leave their offices in connection with the incident while a number of investigations of the theft are being conducted. But all this in no way suggests the cabinet and the parliament not to discuss the issue. In fact, with many agencies, public and private, as well as experts having already confirmed that without any complicity from any quarters close to the central bank, in particular, it was impossible for the international crime syndicate to steal the money, it has become imperative for the parliament responsible for monitoring all activities of the people holding public offices to seriously look into the matter. Besides, if the issue is discussed in the parliament, it will certainly help to dispel public speculations that the government is not serious enough about plugging loopholes, if any, in the way the central bank has handled the reserve so far.

The speculation has already become widespread for reasons, including the failure of the incumbents to take deterrent action against those who allegedly masterminded the scams that hit different state-owned banks ever since they assumed office in 2009. It is all the more so as the investigations of the biggest-ever reserve theft, which was detected by the central bank authorities just two days after it had taken place on February 5, took too much time to begin for mysterious reasons. The steps to recover the money have also reportedly been delayed. In any case, the government should immediately heed the CPD suggestions on the issue.

 


 

Published in কালের কণ্ঠ on Tuesday, 19 April 2016

আসছে বড় বাজেট

বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিন

আসছে নতুন বাজেট। জুনের প্রথম সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২ জুন) সংসদে নতুন বাজেট পেশ করার কথা রয়েছে। সাধারণত বাজেট কাছাকাছি এলেই বাজারে অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই বাজেটের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের মনে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করে। শঙ্কা থাকলেও এবার বাজারের সেই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখন পর্যন্ত লক্ষ করা যায়নি। বাজেট সামনে রেখে এরই মধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের দাবি, প্রস্তাব ও পরামর্শ উঠে আসতে শুরু করেছে। গত রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত বাজেটসংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। ঢাকা চেম্বার এই আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার ও বাংলাদেশ চেম্বার তা তিন লাখ করার প্রস্তাব দিয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অপ্রদর্শিত অর্থকে বিনিয়োগে আনার কৌশল খোঁজার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি তারা এনজিওগুলোর কাজকর্মের ওপর পর্যবেক্ষণ জোরদার করার এবং তাদের কাছে আসা বিদেশি তহবিলের এক-চতুর্থাংশ সরকারের তত্ত্বাবধানে ব্যয় করার সুপারিশ করেছে। সেক্টরভিত্তিক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনও নিজ নিজ অবস্থানে নানা ধরনের দাবি উত্থাপন করছে।

বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ জন্য দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি সুবিধা নিশ্চিত করাসহ বহু শর্ত পূরণ করতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রতিবছরই বাজেটের আকার বাড়াতে হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এ ক্ষেত্রে এবার ‘বিগ জাম্প’ দিতে হবে। তিনি ধারণা দিয়েছেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট হতে পারে তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার। আর তাতে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হতে পারে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছেন, সমমানের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের বাজেট এখনো অনেক ছোট। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বড় আকারের বাজেট করার কোনো বিকল্প নেই। বাজেটে আকার বা ব্যয়ের পরিমাণ শুধু বাড়ালে হবে না, একই সঙ্গে আয়ও বাড়াতে হবে। আর সে আয়ের বেশির ভাগই আসে জনগণের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের করের মাধ্যমে। কিন্তু এই ক্ষেত্রটিতে এনবিআর চলতি অর্থবছরে যে কার্যক্রম দেখিয়েছে তা খুব একটা আশাপ্রদ নয়। সিপিডির তথ্য অনুযায়ী, বছর শেষে রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি কমানো না গেলে বড় বাজেট করেও বড় ফল পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকেই যাবে। সিপিডিসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সক্ষম করদাতাদের ৫০ শতাংশেরও বেশি এখনো করজালের বাইরে রয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে এনবিআরের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বড় বাজেটের স্বার্থে এই সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং দুর্বলতাগুলো দূর করতে হবে। আরেকটি বড় দুর্বলতা রয়েছে বাজেট বাস্তবায়নে। আমরা আশা করি, সব দিক বিবেচনা করে আগামী বাজেট করা হবে এবং তা দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করবে। পাশাপাশি তা সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও সহায়ক হবে।

 


 

Published in বণিক বার্তা on Tuesday, 19 April 2016

রিজার্ভ চুরি নিয়ে নীরব সংসদীয় কমিটি

সব আর্থিক কেলেঙ্কারির শুনানি হোক

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে রহস্যের যেন অন্ত নেই। শ্রীলংকা ও ফিলিপাইনের সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে, দেশটির সিনেটে নিয়মিত শুনানি হচ্ছে। অথচ যে দেশের অর্থ চুরি হলো, তারা কিনা একটি কমিটি গঠন ও নতুন গভর্নর নিয়োগ দিয়েই সব দায় শেষ করল! হতাশাজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও এ-সংক্রান্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রাক-বাজেট এক সংবাদ সম্মেলনে অত্যন্ত যৌক্তিকভাবেই সংসদীয় কমিটির এ নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তারা আরো বলেছে, বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রথম শুনতে হলো বাইরের দেশ থেকে। ফিলিপাইন প্রথম এ খবর প্রকাশ করল। জানাল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কও। এমনকি শ্রীলংকার এনজিওর নামে পাচার হওয়া অর্থ তুলতে গিয়ে ধরা পড়ার যে ঘটনা ঘটল, সেটাও বাইরে থেকে জানা গেল। এগুলো খুবই উদ্বেগের বিষয়। এর মধ্য দিয়ে আর্থিক খাতের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতাই প্রকাশ পেয়েছে। এ অবস্থায় রিজার্ভ চুরিসহ সব ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি তদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে উন্মুক্ত শুনানি হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে বড় ধরনের সংস্কারের জন্য দ্রুত ব্যাংকিং কমিশন গঠন করাও জরুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে সরকার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে জানা যায় না। এমনকি অবস্থানও স্পষ্ট করা হয়নি। এতে রিজার্ভ চুরি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে প্রতি নিয়ত, যার সদুত্তর না মিললে নানা সংশয় তৈরি হতে পারে। এটি কাম্য নয়। আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান এ দেশে। সেই প্রতিষ্ঠানে এত বড় কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটলেও এক মাস পরে তা জানল অর্থ মন্ত্রণালয়। রিজার্ভের অর্থ দেশের মানুষের পরিশ্রমের ফসল, সেটি নিয়ে উদাসীনতা প্রদর্শনকারীদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হলে তা ভালো উদাহরণ তৈরি করবে না। এখনো সময় রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে স্বতন্ত্র উদ্যোগ নিতে পারে। বিষয়টি তদন্তে আলাদা সংসদীয় কমিটিও গঠন করা যেতে পারে। সংসদ অধিবেশন ডেকে দেশের আর্থিক খাত, সংশ্লিষ্ট কেলেঙ্কারি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা হলে জনমনে আস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে বিষয়টি মন্ত্রিসভায়ও আলোচনা হওয়া জরুরি।

দেশের আর্থিক খাত এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। একাধিক আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ও বিনিয়োগে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ না করায় এ খাতে এক ধরনের অস্থিরতা বিদ্যমান, যা কিছু সূচক দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অবস্থা সঙ্গিন, সরকারের সহায়তার কারণেই শুধু টিকে আছে। অন্যদিকে একাধিক বেসরকারি ব্যাংকে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রশাসক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করা যাবে না। আরো কিছু ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এগুলোকে তদারকির দুর্বলতা হিসেবেই দেখতে হবে। আইন আছে কিন্তু তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নেই। সংসদীয় ব্যবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজ তদারকির জন্যই গঠন করা হয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং এর সভাপতি নির্বাচিত করা হয় একজন জনপ্রতিনিধিকে, যাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছ থেকে আরো সক্রিয়তা আশা করে জানান। বর্তমান বাস্তবতায় বিচার প্রক্রিয়া, আইন পরিচালনা, অপরাধীদের গ্রেফতার প্রভৃতি বিষয় নিয়ে নানা শঙ্কা সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার সঠিক তদন্ত ও সত্য উদ্ঘাটনের স্বার্থেই সংসদীয় কমিটিতে ও সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে উন্মুক্ত গণশুনানিরও আয়োজন করা যেতে পারে। এতে অনেক বিষয় বেরিয়ে আসবে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত হতে পারে। আমরা চাইব, সিপিডি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, সরকার দ্রুত তার উত্তর দেবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের স্বার্থেই।

 


 

Published in যুগান্তর on Tuesday, 19 April 2016

সিপিডির পর্যবেক্ষণ

আমলে নেয়া প্রয়োজন

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সম্পর্কে যে পর্যালোচনা করেছে তার মধ্যে বেশ কিছু বিষয় গুরুত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো, আয়ের ক্ষেত্রে নতুনত্ব, ব্যয়ের গুণগত মান, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে দেয়া এ পর্যালোচনায় স্বভাবতই উঠে এসেছে জাতীয় বাজেট প্রসঙ্গ। এ বিষয়ে সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক বিবেচনায় বাজেটের আকার মোটেই বড় নয়। কিন্তু সমস্যা হল অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন। অর্থায়নের ক্ষেত্রে বড় উৎস হল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির আয়ের তিনটি খাত আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শুল্ক। কিন্তু চলতি বছরে আয়কর খাতে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিু। আর বছর শেষে মূল লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আয়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। এ ঘাটতি কীভাবে পূরণ করা হবে সেটাই আমাদের প্রশ্ন।

সরকার দাবি করছে, এবার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেড়েছে এবং বছর শেষে তা দাঁড়াবে ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। এ বিষয়ে সিপিডি যে প্রশ্ন তুলেছে তা যুক্তিসঙ্গত। সংস্থাটি বলেছে, দেশে বিনিয়োগ কমেছে, কর আদায়ের প্রবৃদ্ধিও কমছে। এরপরও ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্থনীতির সঙ্গে বিপরীত আচরণ। বস্তুত প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মহল থেকে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এর একটি ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি, প্রবৃদ্ধি প্রকৃতই বৃদ্ধি পাক অথবা তা বাড়িয়ে দেখানো হোক- দেখতে হবে জনগণ এর সুফল কতটা পাচ্ছে। কোন কোন খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে এবং তাতে সাধারণ মানুষের উপকার হচ্ছে, নাকি সুবিধাভোগকারী মুষ্টিমেয় মানুষ আরও উপকৃত হচ্ছে। অর্থাৎ সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে কি-না। তা যে নেয়া হয়নি এর প্রমাণ দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়ে যাওয়া। বিত্তবানদের একটি অংশ তাদের বাড়তি অর্থ পাচার করে দিচ্ছে। অথচ এ অর্থ দেশে বিনিয়োগ হলে উপকৃত হতো সাধারণ মানুষ।

দেশে যে বিনিয়োগ বাড়ছে না, তা উঠে এসেছে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের বক্তব্যেও। তিনি বলেছেন, অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে সরকারি বিনিয়োগ বাড়লে বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগের তোরণ তৈরি হয়। কিন্তু দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ গত বছরের চেয়ে কমেছে। এর অর্থ হল সরকারি খাতে যে বিনিয়োগ দেখানো হচ্ছে, এক্ষেত্রে হয় অপচয় হয়েছে, নয়তো দুর্নীতির মাধ্যমে বাড়তি দেখানো হচ্ছে।

বস্তুত দেশে বিনিয়োগ না বাড়ার একটি বড় কারণ গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ও অনুন্নত অবকাঠামো। এদিকে আশু দৃষ্টি না দিয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির কথা বলে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যাবে না। সিপিডি বলছে, সরকারের বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নেতৃত্বেও রয়েছে বিভ্রান্তি। সংস্থাটির এসব পর্যবেক্ষণ সরকার আমলে নেবে, এটাই কাম্য।

 


 

Published in নয়া দিগন্ত on Tuesday, 19 April 2016

বাজেট নিয়ে সিপিডির পরামর্শ

কাগজে কলমে নয়, বাস্তবতা বিবেচনায় নিন

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশের ওপরে। তার এই ঘোষণা নিয়ে এখন বিতর্ক চলছে। কারণ অর্থনীতির সূচকগুলো বলছে, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো নেই। বিদেশী বিনিয়োগ কমে গেছে, ব্যাংক থেকে উৎপাদনমুখী খাতে ঋণপ্রবাহ কমছে, মানুষের কর্মসংস্থান কমে গেছে, রাজস্ব আদায়ের চিত্র ভালো নয়। এমন সব নেতিবাচক অবস্থা নিয়ে কিভাবে প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী থাকছে সে প্রশ্ন বিভিন্ন মহল থেকে তোলা হয়েছে।

সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি (সিপিডি) ডায়ালগ আগামী বাজেট নিয়ে তাদের সুপারিশ তুলে ধরেছে। সেই আলোচনায় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলছে বছর শেষে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না। প্রবৃদ্ধির হার কম হবে। এর কারণ হিসেবে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, আয়কর প্রবৃদ্ধি ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমে যাওয়াকে উল্লেখ করেছে।

সিপিডি এ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছে। এতে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের মধ্যে এবার প্রথম আয়কর খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে কম। এর ফলে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ৩৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেবে। ২০০৩ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে দেশে যেখানে প্রতি বছর ১৩ লাখের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, সেখানে ২০১৩-১৫ সালে বছরে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র তিন লাখ লোকের। এ ছাড়া দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে, যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যাংক থেকে লুটপাট বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের মতো ঘটনা দেশের ব্যাংক-ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। এসব বিষয় নিয়ে যে জবাবদিহিতা দরকার ছিল তা হয়নি।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সিপিডির এই বিশ্লেষণে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি বাস্তব প্রতিফলন উঠে এসেছে। আগামী বাজেট প্রণয়নে সরকারের উচিত হবে সিপিডির পরামর্শগুলো বিবেচনা করা। অর্থনীতি কোনো আবেগের বিষয় নয়, বাস্তবতার বিষয়। কাগজে কলমে প্রবৃদ্ধি বেশি দেখালে দেশের পরিস্থিতি বদলে যায় না। মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন যাপন করতে গিয়ে বুঝতে পারে দেশের অর্থনীতি কোন অবস্থায় আছে। সাধারণ মানুষ অর্থনৈতিক সচ্ছলতার মধ্যে থাকলে, ব্যবসায় বাণিজ্য ভালোভাবে চললে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হলে বোঝা যাবে অর্থনীতিতে গতি এসেছে। কাগজে কলমে সাফল্য দেখিয়ে মানুষের উন্নয়ন হবে না। সরকারকে বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।