Published in Daily Sangram on Sunday, 9 March 2014.
জিএসপি পেতে সব শর্ত পূরণ কঠিন চ্যালেঞ্জ
সংগ্রাম ডেস্ক : বাংলাদেশী পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেয়া সব শর্ত পূরণ বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। প্রাইমনিউজ ডট কম ডট বিডি।
তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হবে, এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তারা। বলেছেন, অতীতে এমন অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সফলও হয়েছে।
জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেয়া ১৬ শর্তের মধ্যে ১২টি শর্ত ইতোমধ্যেই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তিনি বলেছেন, বাকি চারটি শর্ত চলতি মার্চ মাসের মধ্যে পূরণ করা হবে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্যোগও নেয়া হযেছে।
এই চারটি শর্তের অন্যতম হচ্ছে ইপিজেড-এ শ্রম আইন বাস্তবায়ন করা, বিশেষ করে ইপিজেড-এ শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সংস্কারকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচলিত শ্রম আইন সংশোধন করা।
এছাড়া গার্মেন্ট শিল্পের তদারকির জন্য ২শ’ পরিদর্শক নিয়োগ, সকল কারখানা শ্রমিকদের ডাটা বেইজের আওতায় আনা ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়া ১৯ গার্মেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
তৈরি পোশাক কারখানার কাজের পরিবেশ এবং শ্রমিকের স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক থাকার অভিযোগে গত বছরের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি স্থগিত করে ওবামা প্রশাসন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান জিএসপি ফিরে পাওয়া নিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেয়া সব শর্ত পূরণ বাংলাদেশের জন্য অনেক কঠিন। তবে অতীতে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার নজীর আমাদের আছে। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে এটা করতে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে জিএসপি ফিরে পাওয়া নিয়ে যেন কোনো রাজনীতি না হয়। এজন্য সরকারকে সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’
সেন্টার ফর ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীত ফেলো বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বেঁধে দেয়া ১৬ শর্তের ১২টি পূরণ করা হয়েছে। বাকি চারটি শর্ত পূরণ খুবই কঠিন কাজ। বিশেষ করে শ্রমিকদের ডাটা বেইজের আওতায় আনা, শ্রম আইন সংশোধন ও ইপিজেড-এ শ্রম আইন বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। মালিক, শ্রমিক, রাজনীতিকদের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এই শর্ত পূরণে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত বছর জিএসপি স্থগিতের সময় যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি রাজনৈতিক বিষয়গুলোও বিবেচনায় নিয়েছিল। আমাদের উচিত হবে ১৬ শর্তের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা। যাতে করে এই শর্তের সঙ্গে রাজনৈতিক শর্ত জুড়ে না দেয়া হয়। সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও জিএসপি ফিরে পাওয়ার অভিযানে সঙ্গে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, জিএসপির আওতায় বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয় না। বাংলাদেশ জিএসপির আওতায় মূলত সিরামিক পণ্য, চশমা, তাঁবু, প্লাস্টিক ব্যাগ, উলের তৈরি পোশাক ও শতরঞ্জি যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা হয়।
Also published in Ajkaler Khobor on Sunday, 9 March 2014.