Published in Banik Barta on Tuesday, 28 January 2014.
অর্থবছরের প্রথমার্ধ: ব্রাজিল-দক্ষিণ আফ্রিকায় পোশাক রফতানি কমেছে
বদরুল আলম
তৈরি পোশাক খাতের নতুন বাজার হিসেবে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় রফতানি কয়েক বছর ধরেই বাড়ছিল। তবে চলতি অর্থবছর ওই ধারায় ছেদ পড়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে দেশ দুটিতে পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রাজিলে পোশাক রফতানি হয় ৯ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ডলার।
একই চিত্র দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রেও। এ বাজারে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রফতানি হয় ৩ কোটি ৫ লাখ ৪০ হাজার ডলারের। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কমে হয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বাজারটি পার্শ্ববর্তী অনেক দেশের ব্যবসায়িক কেন্দ্রস্থল। অর্থাত্ দক্ষিণ আফ্রিকায় রফতানি করা গেলে আশপাশের বাজারগুলোয়ও তা পৌঁছে যায়। তবে বাজারটিতে মূল সমস্যা হলো শুল্ক বাধা। পণ্যভেদে সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপিত আছে বাজারটিতে। তাই সম্ভাবনা সত্ত্বেও এ বাজারে রফতানি কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ানো যাচ্ছে না।
একই ধরনের বাধা রয়েছে ব্রাজিলের বাজারের ক্ষেত্রেও। যদিও গত বছর দেশটিতে বাংলাদেশের দূতাবাস স্থাপন হওয়ায় সামনের দিনগুলোয় রফতানি বাড়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে নিট পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বণিক বার্তাকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য চুক্তি রফতানি হ্রাস পাওয়ার মূল কারণ। তার পরও এটি কাটিয়ে উঠার উপায় রয়েছে। সে চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।
শুধু ব্রাজিল কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, অন্যান্য নতুন বাজারকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের জন্য নতুন নতুন বাজার সম্প্রসারণের বিকল্প নেই। সম্প্রতি ক্ষুণ্ন হওয়া ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনাসহ এ দিকটায় মনোযোগ বাড়াতে হবে।
২০০৯-১০ অর্থবছরের পর থেকে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশী পোশাকের রফতানি বাড়ছিল। ২০০৯-১০ অর্থবছর ব্রাজিলে পোশাক রফতানি হয় ৪ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলারের। ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশটিতে রফতানি হয় ৯ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পণ্যটি রফতানি হয় যথাক্রমে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার, ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার, ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ও ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার ডলারের।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু জানান, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় গত বছর আমরা প্রচারণামূলক কার্যক্রমে অংশ নিই। সফলও হয়েছে সে কার্যক্রম। ব্রাজিলসহ দক্ষিণ আমেরিকার আরো কয়েকটি দেশেও প্রচারণার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’