পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সমগ্র অঞ্চলকে অভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় এনে সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সরকারের একটি অন্যতম অঙ্গীকার। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পদ্মা সেতু ইতোমধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে ৮২ কিঃমিঃ রেলপথ পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ৩য় টার্মিনাল এবং দৃষ্টিনন্দন কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন যাত্রায় নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
গাজীপুর হতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত মোট ২০ কিলোমিটার বিআরটি লেনের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে উত্তরা বি.এন.এস সেন্টার হতে টঙ্গি চেরাগ আলী মার্কেট পর্যন্ত ঢাকামুখী ৪.৫ কিলোমিটার এবং ময়মনসিংহমুখী দুই লেন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে৷ এছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে আশুলিয়া হয়ে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। পিপিপি ব্যবস্থার আওতায় ঢাকা-জয়দেবপুর- দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর প্রবেশ-নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বলিয়ারপুর হতে নিমতলী-কেরানিগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ৩৯.২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে রেলখাতের উন্নয়নের জন্য গত ১৫ বছরে দেশে ৯৪৭.৯৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন/পুননির্মান, ১৪৮টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৮টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন/পুননির্মান, ১ হাজার ৬২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন/পুননির্মান, ১৩৭টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নতুন ১৪৪টি ট্রেন চালু করা হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ রেলওয়ের মাস্টারপ্ল্যান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক ও ২য় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা/টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এবং নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪ অনুযায়ী বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিগত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমা ৭ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ডিজিটাল টাইডাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিগত এক দশকে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গমিটার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে, যার ফলে বন্দরের কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোংলা বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং কার্যক্রম আধুনিকীকরণসহ ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (ভিটিএমআইএস) প্রবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি, দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর পায়রায় সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
প্রকাশকাল: জুন ২০২৪