Published in প্রথম আলো on Wednesday, 7 September 2016
২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জনের পথ: দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিতকরণ
গত ১৭ আগস্ট ২০১৬, প্রথম আলো ও ইউএনএফপিএর আয়োজনে ‘২০৩০ সালের লক্ষ্য অর্জনের পথ: দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।
আয়োজনে:
আলোচনায় সুপারিশ
*এসডিজির ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে
*টেকসই উৎপাদন ও ভোগের জন্য সরকার, উৎপাদনকারী, উদ্যোক্তা, গণমাধ্যমসহ সবার একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন
*একজন যুবসহ যেকোনো মানুষকে সাফল্য অর্জন করতে হলে প্রথমে পুঁজি ও দক্ষতার প্রয়োজন। রাষ্ট্রের আরও বেশি করে পুঁজি ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে
*প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। এটা যেন দ্রুত হয়, সে জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন
*যেকোনো মূল্যে খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে
আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে আজকের এ গোলটেবিল বৈঠক। এখন আমরা জনমিতিক সুবিধা ভোগ করছি। দেশে মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ যুবসমাজ। এদের কাজে লাগাতে পারলে দেশের উন্নয়ন দ্রুততর হবে।
এ জন্য প্রথমেই দরকার দারিদ্র্য দূর করা। দেশের দুর্গম ও উপকূলীয় অঞ্চলে দারিদ্র্যের হার বেশি। দারিদ্র্য দূরীকরণের সঙ্গে টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিত করা জরুরি। এসবই আজকের আলোচনার বিষয়। এখন আলোচনা করবেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আ হ ম মুস্তফা কামাল: এমডিজিতে (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) আমরা ভালো করেছি। এমডিজি থেকে এসেছে এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা)। এসডিজি কোনো একটি দেশের জন্য নয়, এটি মানবসভ্যতার কল্যাণের জন্য। এসডিজি অর্জনের সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত।
এমডিজির মতো সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে ২০৩০ সালের আগেই আমরা লক্ষ্যে পৌঁছে যাব। এসডিজিতে ১৬৯টি লক্ষ্য (টার্গেট) আছে। এর প্রায় সব কটিই আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছে। এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য সরকার থেকে ভালো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কোন টার্গেট নিয়ে কোন মন্ত্রণালয় কাজ করবে, কাজটি কারা সমন্বয় করবে এবং চূড়ান্তভাবে কাজটি হলো কি না, এগুলো তদারক করার জন্য একটি এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আমরা প্রতিটি কাজকেই গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। এ কাজগুলো অর্জন করতে গেলে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রয়োজন হবে। এটি কোনো একক মন্ত্রণালয় বা ব্যক্তির কাজ নয়, এসডিজির লক্ষ্য অর্জন আপনার আমার সবার কাজ। দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমরা এ কাজ করব।
মুনির হোসেন: বাংলাদেশে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের জনসংখ্যাকে যুবসমাজ ধরা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে যুবদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। বাংলাদেশ লেবার ফোর্স সার্ভে ১৫ থেকে ২৯ বছরের জনসংখ্যাকে যুব হিসেবে ধরেছে। এ হিসেবে বাংলাদেশে যুবসমাজের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি। হয়তো ৪০ বছর পর্যন্ত আমাদের যুব জনসংখ্যা সাড়ে চার কোটি থেকে পাঁচ কোটি থাকবে।
এটাই হলো জনমিতিক–সুবিধার সুযোগ, যেখানে কর্মক্ষম জনসংখ্যা নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। যুবদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারলে জনমিতিক–সুবিধা নিতে পারব। বিশেষ করে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত হলে কর্মসংস্থান হবে। কর্মসংস্থান হলে আয় বাড়বে, আয় বাড়লে সঞ্চয় বাড়বে। এভাবে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য হ্রাস পাবে।
যুবদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য সুরক্ষা, মানসম্মত শিক্ষা, চাকরির সুযোগ, মেয়েদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব ও নীতিনির্ধারণীতে এদের যুক্ত করতে পারলে দারিদ্র্য নিরসন, উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিতকরণে যুবরা অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে দেশের উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে।
দেশে ১৫ থেকে ২৯ বছরের ১৫ শতাংশ যুব কখনো স্কুলে যায়নি। বর্তমানে মোট যুব জনসংখ্যার ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ কোনো ধরনের শিক্ষা ও কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেই।
ইতিমধ্যে সরকার যুবসমাজের জন্য নীতিমালা তৈরি করেছে। এটা অত্যন্ত ভালো একটি নীতিমালা। এই নীতিমালা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে পারলে বাংলাদেশের যুবরা হবে সবচেয়ে দক্ষ ও যোগ্য।
এম শহিদুল ইসলাম: বিশ্বের জনসংখ্য্য দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ইউএনএফপিএর এক তথ্য বলছে, ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৯৬০ কোটি। ২০৪১ সালে আমাদের দেশের জনসংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকলে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর বড় ধরনের চাপ পড়বে।
সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। এর মূল্য প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার। এটা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতির মোট সম্পদের সমান অথবা বাংলাদেশের অর্থনীতির চার গুণ। পৃথিবীতে এক বিলিয়ন মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। আবার এক বিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার সঙ্গে লড়ছে।
অন্যদিকে বিশ্বে দুই বিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছে। আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্য অনেকাংশে দূর করতে পারলেও অপুষ্টির সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারিনি। দেশের লাখ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। টেকসই উৎপাদন ও ভোগের জন্য সরকার, উৎপাদনকারী, উদ্যোক্তা, গণমাধ্যমসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তৌফিকুল ইসলাম খান: এসডিজি বাস্তবায়নে যে কটি দেশ কাজ শুরু করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে সরকার পরিকল্পনা করেছে। অর্থায়ন ও তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার কাজ চলছে। সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে এসডিজি নিয়ে দেশে কাজ শুরু হয়েছে।
এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে টেকসই উৎপাদন ও ভোগ হলো ১২ নম্বর লক্ষ্য। এ লক্ষ্যের গুরুত্ব রয়েছে। আজকের আলোচনার মাধ্যমে এর গুরুত্ব আরও বাড়বে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো প্রথমে অগ্রাধিকার দেয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিকের ওপর। পরিবেশের দিকটি সব সময় পেছনে পড়ে যায়। উন্নত বিশ্বের ভোগ কাঠামোর জন্যই কিন্তু পরিবেশ আজ হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের উৎপাদন–প্রক্রিয়ার মধ্যে পরিবেশের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। বাংলাদেশের নীতিকাঠামোর মধ্যে এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে আসেনি। ২০১০ সালে ন্যাশনাল সাসটেইনেবল স্ট্র্যাটেজি (এনএসএস) তৈরি করা হয়েছে ২০২১ সাল পর্যন্ত। এই স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের নীতিকাঠামোর অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।
আমাদের টেকসই ভোগ ও উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন। আরেকটি বড় বিষয় হলো, এসব বিষয়ে তথ্যের অভাব রয়েছে। তথ্যের অভাবে একদিকে আমাদের অবস্থান কোথায়, সেটা জানতে পারছি না; অন্যদিকে সঠিক তথ্য ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। এ চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।
ফারহানা এ রহমান: যেকোনো কাজ করতে হলে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পঁুজি ও দক্ষতা। একদিকে পুঁজি প্রাপ্তির সমস্যা রয়েছে, অন্যদিকে যুবসমাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে তেমন দক্ষতা অর্জন করেনি।
এই যুবসমাজের অর্ধেক নারী। এখন ঘরে ঘরে মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। আমাদের সামাজিক অবস্থা ও মানসিকতার জন্য তারা কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক হারে আসতে পারছে না। একজন নারীর ঘরসংসার ও সন্তান দেখা একটা কাজ। কিন্তু একজন শিক্ষিত নারী তাঁর শিক্ষা ও দক্ষতা নিয়ে সারাক্ষণ কাজটি করতে পারেন না।
তাঁর জন্য অবশ্যই কাজের সুযোগ থাকা প্রয়োজন। সকাল নয়টা–পাঁচটা অফিস না করলেও কমপক্ষে তিনি যেন ঘরে উদ্যোক্তা হতে পারেন, সে সুযোগ তাঁর জন্য থাকা উচিত।
এ সমাজে একজন ছেলে একটি চায়ের দোকানে বসেও অনেক কিছু জানতে পারে। কিন্তু একটি মেয়ের তথ্য পাওয়া এখনো এত সহজ নয়। এ জন্য মেয়েদের প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর আরও জোর দিতে হবে।
একজন মেয়ে সহজে একটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারে না। এসডিজির লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে হলে বাংলাদেশের নারীদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
নুসরাত মুনতাকা খান: একজন যুবাসহ যেকোনো উদ্যোক্তাকে সাফল্য অর্জন করতে হলে প্রথমে পুঁজি ও দক্ষতার প্রয়োজন। আবার একটি ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনেক নিয়মকানুন জানতে হয়। আমরা যুবদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি অধিকাংশ যুবাই অনেক কিছু জানে না।
ব্যবসা করতে গেলে টিন সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্সসহ আরও কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। নিবন্ধনের একটি বিষয় থাকে। এসব বিষয়ে যুবরা খুব একটা জানে না। সামাজিকভাবে এগুলো জানার কোনো ব্যবস্থা নেই। বিভিন্নভাবে তাদের এসব বিষয় জানানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
আজ যার বয়স ১০ বছর, ২০৩০ সালে সে হবে ২৫ বছরের যুব। এখন দেশের স্কুলগুলোতে বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে যুবদের কর্মমুখী করে তোলার বিভিন্ন ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে আজকের কিশোরদের বয়স যখন ২৫ বছর হবে, তখন তারা অর্থ উপার্জনের জন্য যেকোনো উদ্যোগ নিজেরাই গ্রহণ করবে।
২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে বড়জোর ১০ ভাগ যুবা জানে। তারা যদি না-ই জানে, তাহলে কীভাবে নিজেদের সমৃদ্ধ করবে? তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুবদের জন্য বিনিয়োগ করার এখনই শ্রেষ্ঠ সময়।
মোস্তাফিজুর রহমান: যুবদের মধ্যে বাল্যবিবাহ একটি বড় সমস্যা। কিন্তু যুবরা উদ্যোগ নিলে সহজে এ সমস্যা থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারে। আমার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। আমরা এখানকার যুবরা মিলে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরের সব যুবার জন্য কার্ড করেছি। এ কার্ডে প্রত্যেকের নাম, জন্মতারিখ, মা-বাবার নাম থাকে। কার্ডের কপি স্থানীয় থানায়, চেয়ারম্যানের কাছে, যুবদের কাছে আছে। কোথাও ছেলেমেয়ের বিয়ে হলে আমরা কার্ডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখি বাল্যবিবাহ হচ্ছে কি না, বাল্যবিবাহ হলে থানা ও চেয়ারম্যানকে জানাই। তারা ব্যবস্থা নেয়।
এভাবে সরকার চাইলে যুবদের বিভিন্নভাবে কাজে লাগাতে পারে। যুবদের জন্য খুব কম সুদে ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। তাহলে যুবদের যে কেউ এখান থেকে ঋণ নিয়ে সহজে কোনো কিছু করার উদ্যোগ নিতে পারে।
বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে যুব নারীদের জন্য সরকারের দিক থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
নাজনীন আহমেদ: নবম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের প্রথম গল্পটায় বলা আছে, একজন লোক বিভিন্ন কাজ করছে এবং শেষে সে সংসারের কাজ ও রান্নাবান্নার জন্য বাড়িতে একজন বউ আনল। নবম শ্রেণির একজন কিশোর বা কিশোরী বই পড়ে শিখছে, বউ হলো সংসারের কাজ ও রান্নাবান্নার জন্য।
সরকার–প্রণীত টেক্সট বইয়ের অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে সে সমাজে নারীর অবস্থান কী হবে, সেটা সহজেই বোঝা যায়। এটা পড়ে একজন কিশোরীও মনে করছে তার কাজ হলো সংসার দেখা ও রান্নাবান্না করা। অবশ্য নিচে একটা প্রশ্ন আছে মেয়েদের ভূমিকা এটা হওয়া উচিত কি না। কিন্তু মূল গল্পের কোথাও নারীর বিষয়ে আর কিছুই বলা নেই।
কয়েক দিন আগে এসডিজি নিয়ে আলোচনার একটি কর্মশালায় একজন পুরুষ কর্মকর্তা বললেন, নারীদের তো অনেক দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায় মনে হলো, তিনি নারীদের দয়া করছেন।
অর্থমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা টোকেন বরাদ্দ রাখছেন। টোকেন শব্দটা ব্যবহার করা ঠিক হলো কি? টোকেন বরাদ্দ বললে নারী উদ্যোক্তাদের ছোট করা হয়।
আমাদের নারী উন্নয়ন নীতি অত্যন্ত ভালো। শুধু উত্তরাধিকারের বিষয় বাদ দিলে এর যে পরিকল্পনা সেটাও অসাধারণ। আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে নারীদের জন্য যেসব কাজ করার কথা, তা যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন: দেশের উন্নয়নে সরকাির ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। এবার বাজেটে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে। এখন বাংলাদেশে বাণিজ্য, অর্থ, শিক্ষা, শ্রম মন্ত্রণালয়সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। কিন্তু আমাদের কারখানাগুলোতে একজন বিবিএ করা যুবাকে সুতা কাটতে হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রীকে অনুরোধ করব, যাঁরা দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তাঁদের কাজের মধ্যে যেন সমন্বয় আনা হয়। দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে এমন একটি পরিকল্পনা করতে হবে, যেন এই প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের কাজের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেয়। তাহলে একজন শিক্ষিত যুবাকে কারখানায় গিয়ে সুতা কাটতে হবে না।
আমরা জেনেছি, আমেরিকা থেকে জেনেটিক্যালি মডিফায়েড গম ও ভুট্টা আমদানি হচ্ছে। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটা রপ্তানিকারকদের একটি ষড়যন্ত্র। যেকোনো মূল্যে এটা বন্ধ করা প্রয়োজন। ইউরোপ কোনো ধরনের জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফুড আমদানি করে না। বাংলাদেশ অনেক কিছু করছে। এটাও বন্ধ করা প্রয়োজন। সবাই মিলে কাজ করলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।
মাহমুদ হাসান খানমাহমুদ হাসান খান: টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিত করতে পারলে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে। প্রথমে আমাদের উৎপাদনের ৫ শতাংশ অপচয় হতো। আজ সেটা ১ শতাংশে নেমে এসেছে। আমরা এখন দায়িত্বশীল উৎপাদনের দিকে যাচ্ছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা সামাজিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখছি।
পোশাকশিল্পের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি জনমিতিক সুবিধা গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পোশাকশিল্পে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কর্মীর বয়স ১৮ থেকে ৩২ বছর।
এখন আমাদের একটি নতুন চ্যালেঞ্জ এসেছে, সেটা হলো গ্রিন ফ্যাক্টরি করা। বিশ্বে এ পর্যন্ত যত গ্রিন ফ্যাক্টরি রেজিস্ট্রেশন (ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন) হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। এটা প্রমাণ করে যে, আমরা দায়িত্বশীল উৎপাদন করছি।
আমাদের পোশাকের সঙ্গে ট্রেসেবিলিটি নামের একটি ট্যাগ লাগানো থাকে। এটা স্ক্যান করলে জানা যাবে পোশাকের কাপড় কোথায় উৎপাদিত হয়েছে, কোন কারখানায় উৎপাদিত হয়েছে এবং কারখানাটি কমপ্লায়েন্ট কি না ইত্যাদি। কিন্তু এ কাজগুলো যে সবাই করছে, তা নয়।
প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করবেন। এটা যেন দ্রুত হয়, সে জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। শিল্প একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে গড়ে উঠলে নিয়মের বাইরে কেউ কোনো কাজ করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল উৎপাদন ও ভোগের বিষয়টি আরও বেশি নিশ্চিত হবে।
গোলাম রহমানগোলাম রহমান: বাংলাদেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের ৭০ শতাংশ অর্থই খাদ্য কিনতে ব্যয় হয়। এই শ্রেণির মানুষ কখনো খাদ্য অপচয় করে না। যাঁরা ধনী, উঠতি বড়লোক, তাঁদের মধ্যে খাদ্যের অপচয় দেখা যায়।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের একটা পুরোনো জরিপে দেখা গেছে, ১২টি ফল ও শাকসবজির ৮ থেকে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত অপচয় হয়। আমাদের কাঁঠালের অপচয় প্রায় ৩৩ শতাংশ, কলার অপচয় ৩০ শতাংশ, টমেটোর অপচয় প্রায় ২৮ শতাংশ। বগুড়ার রাইস ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক জরিেপ দেখা যায়, বোরো ও আউশ ধানের অপচয় ৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ অনেক হবে।
কারণ হলো অবকাঠামো, গুদামজাতকরণ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব। এখন এই অপচয় রোধের জন্য ফরমালিনসহ বিভিন্ন কেমিক্যালের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে, যা মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সরকার ২০১৫ সালে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন করেছে। এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত হলেও একেবারে বন্ধ হয়নি। আবার ফরমালিনের পরিবর্তে নতুন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহৃত হচ্ছে। মাছ ও মুরগির ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হচ্ছে, এর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। সরকারের সঙ্গে ভোক্তাদেরও সচেতনতার প্রয়োজন আছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
কামরুল হাসান: দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৩ ভাগের ১ ভাগ যুবসমাজ। এই যুবসমাজের উন্নয়নের জন্য যে পরিমাণ বাজেটের প্রয়োজন হয়, তা পাওয়া যায় না। ফলে যুবসমাজের প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কখনো করা যায় না। তবে এখন আগের থেকে বেশি কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এ পর্যন্ত আমরা ৫০ লাখ যুবদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ২০ থেকে ২৫ লাখ যুব আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে যুবসমাজকে যতটুকু সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন, আমরা সেটা দিতে পারি না। এ জন্য আমরা ব্যক্তি খাতের সঙ্গে চুক্তি করেছি, তারাও এদের সহযোগিতা দেয়।
এখন আমরা চেষ্টা করছি চাকরির বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিতে। দেশের ৪৯৫টি উপজেলায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে যুবরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ২০টি প্রকল্প পাবেন, যেখানে যুবসমাজ ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছে।
বিজিএমইএর মাধ্যমে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এসব মেয়ে এখন পোশাকশিল্পে কাজ করছে। যুবসমাজ যাতে বেকার বসে না থাকে, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বীরেন শিকদার: যুবসমাজ দেশের সব অর্জনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। বৈশ্বিকভাবে ১৫ থেকে ২৪ বছরের জনসংখ্যাকে যুবসমাজ বলা হচ্ছে। আমাদের দেশে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে যে জনসংখ্যা, তারা যুবসমাজ। এ হিসাবে বর্তমানে দেশে যুবেদর সংখ্যা ৪ কোটি ৮০ লাখ ২৪ হাজার বা প্রায় পাঁচ কোটি। যুবদের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস সেন্টার করা হয়েছে। ৬৪ জেলায় আমাদের ১১১টি যুব প্রশিক্ষণকেন্দ্র আছে। শিক্ষিত যুবদের ৭৪টি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যুবদের থাকার জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা আছে। তাদের কিছু ভাতাও আমরা দিয়ে থাকি।
আমরা যুবদের কাজের জন্য ঋণ দিয়ে থাকি। ঋণ নিয়ে তারা সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, সেটা তদারক করি। আমরা প্রায় ৫০ লাখ যুবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এর মাধ্যমে প্রায় ২১ লাখ আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমি অনেক প্রকল্প পরিদর্শন করেছি। এদের অনেকে এখন চাকরি চায় না, চাকরি দেয়। তাদের কারও আয় ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।
এইচএসসি পাস অথচ সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। ৬৪টি উপজেলায় এমন যুবদের সবাইকে আমরা চাকরি দিয়েছি। এই যুবসমাজ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
এম এম আকাশ: যেকোনো ক্ষেত্রে আমরা যদি বর্তমানের সুবিধার জন্য ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিই, তাহলে বুঝতে হবে টেকসই উন্নয়ন করছি না। সমাজে অসমতা রেখে কোনো উন্নয়ন হলে সেটা কখনো টেকসই হবে না।
যতটুকু জানি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অসমতা দূর করার বিষয়ে কোনো লক্ষ্য নেই। চীন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা—এসব দেশে একই সঙ্গে উন্নয়ন হয়েছে এবং সমাজে অসমতাও বেড়েছে। এ অবস্থায় তারা উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে পারছে না। তারা মধ্য আয়ের ফাঁদে পড়ে গেছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া একই সঙ্গে উন্নয়ন করেছে এবং অসমতা দূর করেছে। ফলে তারা সহজে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে পেরেছে।
কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বালাইনাশক ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যঝুঁকি এতটাই বাড়বে, যা প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক ব্যয় বাড়বে। তাহলে আজকের বেশি উৎপাদন ভবিষ্যতের জন্য কতটুকু টেকসই, সেটা ভাবা জরুরি।
বিদ্যুতের জন্য আজ যেভাবে গ্যাস-কয়লা ব্যবহার করছি, এটা ভবিষ্যতে আমাদের বিদ্যুতের টেকসই ব্যবহার ঝুঁকির দিকে নিয়ে যাবে। এখনই বলতে শোনা যায়, গ্যাস-কয়লা ফুরিয়ে আসছে। এখন গ্যাস-কয়লার ব্যবহার কমিয়ে বাতাস, সূর্য এসব উৎস থেকে বিদ্যুৎ পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
আজকের অবকাঠামো করতে যদি মাত্রাতিরিক্ত খরচ হয়, তাহলে অন্য খাতে অর্থের সংকট দেখা দেবে। এটা কোনো টেকসই বিনিয়োগ হলো না। যেমন চীনে এক কিলোমিটার রাস্তা করতে খরচ হয় ১০ কোটি টাকা। ইউরোপে খরচ হয় ২৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশে ৫৪ কোটি টাকা। আর সম্প্রতি ঢাকা-মাওয়া রাস্তা করতে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে ১২২ কোটি টাকা।
তবে আমাদের জন্য একটি সুখবর হলো, সরকার যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারে, তাহলে ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি করা সম্ভব হতে পারে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল: ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে এখন আমাদের অবস্থান ৩২তম। ২০৪০ সালে আমরা ২৩ নম্বরে থাকতে চাই। ২০৪০ সালে বিশ্বে আমাদের অবস্থান যে ২৩ নম্বর হবে, এটা কেবল আমাদের কথা নয়, বিশ্বের অর্থনীতিবিদেরা এটা বলছেন। তখন আমরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, এমনকি অস্ট্রেলিয়ার ওপরে থাকব।
আমি বিশ্বাস করি, আপনারা-আমরা সবাই মিলে যেভাবে চেষ্টা করছি, তাতে ২০৪০ সালের আগেই বিশ্বের মধ্যে ২৩ নম্বর অবস্থানে যাব।
আশা করি ভবিষ্যতে অামাদের খাদ্যসংকট হবে না। কারণ, দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষ করা হয়। বর্তমানে অনেক চর জেগেছে যেখানে চাষাবাদের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের সমান আরেকটি গভীর সমুদ্র অঞ্চল আমরা পেয়েছি।
স্বাধীনতার শুরুতে ১১ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করতাম। এখন ৩৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করি। বিশ্বে এক বিলিয়ন মানুষ না খেয়ে ঘুমায়। আমাদের দেশের একজন মানুষও এখন না খেয়ে থাকে না।
দেশে হাজার হাজার বেদে, কামার, কুমার, জেলে, স্বর্ণকার, কাঠমিস্ত্রিসহ আরও অনেক পেশার প্রান্তিক মানুষ রয়েছে। এদের আরও বেশি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনতে হবে। এ পর্যন্ত এমন একজন মানুষকে পাইনি এদের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নিয়ে এসেছে।
আব্দুল কাইয়ুম: দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উৎপাদন ও ভোগ নিশ্চিতকরণ একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ এসডিজি অর্জনে সফল হবে।
সরকার এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
যাঁরা অংশ নিলেন
আ হ ম মুস্তফা কামাল : সাংসদ, মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
বীরেন শিকদার : সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন : সহসভাপতি, এফবিসিসিআই
গোলাম রহমান : সভাপতি, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
এম এম আকাশ : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
কামরুল হাসান : উপপরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর
নাজনীন আহমেদ : সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, বিআইডিএস
মুনির হোসেন : ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার, ইয়ুথ অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট, ইউএনএফপিএ
মাহমুদ হাসান খান : সহসভাপতি, বিজিএমইএ
তৌফিকুল ইসলাম খান : রিসার্চ ফেলো, সিপিডি
ফারহানা এ রহমান : সহসভাপতি, বেসিস, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ওয়াইইউ সিস্টেমস লি.
এম শহিদুল ইসলাম : পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজর, ইউএনএফপিএ
মোস্তাফিজুর রহমান : সদস্য, ইউনাইটেড নেশনস ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি প্যানেল (ইউএনওয়াইএপি)
নুসরাত মুনতাকা খান : সদস্য, ইউনাইটেড নেশনস ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি প্যানেল (ইউএনওয়াইএপি)
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো