Professor Mustafizur Rahman feels that only dialogue could resolve the current political stalemate, published in Bangladesh Pratidin on Saturday, 31 January 2015.
অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন
ড. মোস্তাফিজুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যা দেশে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকেও সংকটে ফেলতে পারে। আর এ ক্ষতিটা মূলত দেশের সাধারণ জনগণই বহন করছে এবং করবে। সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে। এ সংঘাতময় পরিস্থিতি সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাকেও দুর্বল করে দিচ্ছে।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে হলেও রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আর সহিংসতা বন্ধের জন্য সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। তবে আপাত দৃষ্টিতে সংলাপের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এটা খুবই হতাশা ও নৈরাশ্যজনক। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি সংকট সৃষ্টি করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এই সহিংসতা ও অচলাবস্থার সমাধান কি হতে পারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে কোনো উপায়ে সংলাপে আসতে হবে। উভয় দলকেই সে ব্যবস্থা করতে হবে। সহিংসতার কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রাণহানি ঘটছে। মানবিকতার দিক বিবেচনা করে হলেও এগুলো বন্ধ করতে হবে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থনীতির জন্য এক ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও সহিংসতা এগুলো অমানবিক। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক ও উৎপাদকরা। এ ছাড়া কর্মজীবী মানুষেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কাজকর্ম করতে না পারলে যাদের খাবার জোটে না, তারা কর্মহীন জীবন কিভাবে চালাচ্ছেন? এটা মানবেতর। সেটা বিবেচনায় আনতে হবে। এ ছাড়া সহিংস রাজনীতির কারণে মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। আর্থিক খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষি, পরিবহন ও অন্যান্য খাতে স্বল্প মেয়াদে প্রভাব পড়ছে। কিন্তু ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কর্মসূচির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যা এক ধরনের মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি সংকট সৃষ্টি করবে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে কোনো সংলাপ হতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত আমি হতাশ ও নিরাশ। কেননা কোনো দলের মধ্যে নমনীয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে শীঘ্রই সংলাপ হতে পারে এমন কোনো আশাও করা যায় না।
কিন্তু দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এখনই সংলাপ বা আলাপ-আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে দুদলকেই উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন সব কিছুতেই রাজনৈতিক অচলাবস্থার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ধরে রাখতে হলে সংলাপের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।