Originally posted in আমাদের অর্থনীতি on 30 April 2023
নিজের দেশের নীতি নিজে ঠিক করার সক্ষমতা বা অধিকারকে নীতি সার্বভৌমত্ব বলেছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল নীতি সার্বভৌমত্বের ব্যাখায় তিনি বলেন,জাতীয়ভাবে আলোচনা ছাড়াই আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়া জনগণের অধিকারের লঙ্ঘন।
কারণ আইএমএফের ঋণের জন্য যেভাবে বিদ্যুতের,জ্বালানি ও সারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে এর দায় কে নিবে। নির্বাচনের সময়ে বর্ধিত বিদ্যুতের বা সারের মূল্য নিয়ে ভোটারদের কাছে জনপ্রতিনিধিরা কি জবাব দিবেন। তারাতো এই ঋণ প্রক্রিয়ার সঙ্গেই যুক্ত নন। তাদের ঋণ নেয়ার বিষয়ে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে, সংসদীয় কমিটিতে মন্ত্রী পরিষদে এমনকি অর্থনীতি বিষয়ক উপকমিটিতেও আলোচনা হয়নি।
শুধুমাত্র আমলাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঋণ নেয়া হয়েছে। সরকারের জেষ্ঠ্য আমলারা ঋণের অনুমোদনে স্বাক্ষর করলেন।এভাবেই সরকারের নীতি সক্ষমতা বিনষ্ট হয়েছে। ঋণ নেয়া অনেক সময় অর্থনীতির জন্য সঠিক বলে মনে হলেও এর দায় যেহেতু জনগণকে বহন করতে হবে সেক্ষেত্রে তাদের মতামতের গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।
ড. দেবপ্রিয় বলেন,সরকারের আর্থিকখাতের সংস্কার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনীতিবদিরা, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিরা কথা বলে আসছেন।তাদের কথা জাতীয়ভাবে আলাচিত হয়েছে। কিন্তু সরকার তাদের কথার কোনো গুরুত্বই দেয়া হয়নি। এখন ঠেকায় পড়ে আইএমএফের সকল কথা মেনে নেয়া হচ্ছে। আইএমএফের কথামতো সংস্কারের পথে হাঁটা হচ্ছে। কিছু সংস্কার যেমন কর জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতি বছর জিডিপির ৫ শতাংশ হারে কর বৃদ্ধি করতে হবে। এগুলো ঠিক আছে। কিন্তু প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে এগুলো করা সম্ভব হবে না। হয়তো আমলাদের কথামতো সরকার একটি আধাখেচরা সংস্কার করবে। কিন্তু তাতে মৌলিক কোন সংস্কার হবে না। জনগনও তাতে উপকৃত হবে না। দেশে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে তা হতে হবে জনসম্পৃতার মাধ্যমে।
সবকিছু মিলিয়ে বলা যায় সরকারের কাছে আইএমএফের ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেশের জনগণের কণ্ঠস্বরের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই নীতি সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে।