Originally posted in ভোরের কাগজ on 3 May 2023
আমাদের দেশে কর ফাঁকি একটি বড় সমস্যা বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল রবিবার ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় করের ক্ষেত্রেই ফাঁকির প্রবণতা রয়েছে। রাজস্ব বোর্ডকে প্রতি বছর একটা লক্ষ্যমাত্রা দিতে হয়। সেটা না হলে তাদের কার্যক্রম গতিশীল হয় না। এবার আইএমএফের একটা চাপ আছে, এরপরও লক্ষমাত্রায় ঘাটতি দেখা গেছে। এ অর্থনীতিবিদ বলেন, কর ফাঁকির কারণে অপ্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে ভ্যাটের যে কালেকশন হয় সেটার পুরোটা সরকারের কোষাগারে জমা হয় না। আবার প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে কোম্পানি বা ব্যক্তি করে যে ধরনের নজরদারি, খবরদারি করার কথা, বিশেষ করে করের আওতা বাড়ানো, ডিজিটালাইজেশনের আওতা বাড়ানো, সহজীকরণ করা- এসব জায়গায় সরকারের আশানুরূপ নজরদারি নেই। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, যেসব খাতে ট্যাক্স ছাড় দেয়া আছে সেসব জায়গায় অনেক বেশি পর্যালোচনা করা উচিত। কারণ কোনো খাতে কত বছর করছাড় দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা উচিত। কেয়ামত পর্যন্ত তো কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বড় বড় কর্তা ব্যক্তিদের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বছরের পর বছর বিভিন্ন ধরনের আইনের সংস্কার করতে পারছে না এনবিআর। সংস্কারের উদ্যোগ নিলেই একশ্রেণির প্রভাবশালীর বাধা আসে। এটিও একটি বড় ধরনের সমস্যা। তাই এসব দিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব, আইনের সংস্কার করতে হবে। কারণ, অর্থনীতির আকার গত এক দশকে যে হারে বেড়েছে, সেই হারে রাজস্ব আদায় বাড়েনি। কর দেয়া সহজ হয়নি। আবার বছরের পর বছর কর অব্যাহতির সুবিধা নিয়ে দেশের বহু শিল্প খাতের বিকাশও হয়েছে।
ড. মোস্তাফিজ বলেন, লক্ষমাত্রা পূরণে এনবিআরের সর্বশেষ বাধা হচ্ছে লোকবল সঙ্কট। এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। মোটকথা জনবল, টেকনোলজিক্যাল ক্যাপাসিটি, ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল- এগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আরো একটি সমস্যা হচ্ছে অটোমেশন। আমরা অনেক বছর ধরেই অটোমেশনের কথা বলে আসছি। বিভিন্ন সময়ে ভ্যাটের অটোমেশন, ইনকাম ট্যাক্সের অটোমেশন, কাস্টমসের অটোমেশনসহ অসংখ্য প্রকল্প আসলো আর গেল। কিন্তু একটি পরিপূর্ণ অটোমেশন আমরা পাইনি।