Originally posted in দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড on 30 October 2025
জুলাই সনদ, গণভোট বিতর্ক ও নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতায় স্থিতিশীলতা বিপন্ন
মানুষের মনে সন্দেহ হচ্ছে যে, আদৌ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কি-না। আর নির্বাচন হলেও সেটা কি নির্ভরযোগ্য হবে নাকি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হবে-সেটা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, জুলাই সনদ ও তা বাস্তবায়নের অর্ডার এবং গণভোট নিয়ে রাজনীতিতে যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে, তা খুবই চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট থেকেই সবার চাওয়া ছিল, যত দ্রুত নির্বাচন হবে, ততোই দেশের জন্য মঙ্গল। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সরকার সংস্কার, নানা কমিশন গঠন করে শেষে ঐক্য সৃষ্টির বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করে দেশের স্থিতিশীলতা অনিশ্চিত করে তুলেছে।’
ড. ফাহমিদা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘মানুষের মনে সন্দেহ হচ্ছে যে, আদৌ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কি-না। আর নির্বাচন হলেও সেটা কি নির্ভরযোগ্য হবে নাকি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন হবে-সেটা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। আর নির্বাচন যিদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তার পরিণতি কেমন হবে- এসব ভয়ও রয়েছে ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে। আর এসবের প্রভাব গিয়ে পড়ছে অর্থনীতিতে।’
তিনি বলেন, ‘গত এক বছর ধরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ শুন্য, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে সামগ্রিকভাবে শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। আর এর প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবনে। এগুলো বর্তমান সরকারকে বুঝতে হবে। তাদের লম্বা সময় ধরে ক্ষমতা থাকার কথা নয়। সরকারের উচিত ছিল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া। সেগুলো না করে তারা নানা কারণে রিফর্মের নামে পেন্ডোরার বাক্স খুলে বসে, নানা বিষয়ে কমিশন গঠন করে সময় ব্যয় করেছে- যার ফলাফল আসলে শুন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার এমন কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যেসব সিদ্ধান্ত নিতে রাজনৈতিক বৈধ্যতার দরকার হয়। বছর জুড়ে এসব নিয়ে আলোচনা আর মিটিংয়ের পর মিটিং করে সেগুলো এখন গুটিয়ে আনতে পারছে না। এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব এই সরকারের নেই, কেবল রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকারই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
সিপিডির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৌশলগত কারণেই হোক বা যে কারণেই হোক না কেন- বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠন করেও কোন সংস্কার করতে পারেনি। এর মাধ্যমে এক-দেড় বছর সময় নষ্ট করেছে। এসব কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে। এ সংকট দূর করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা সরকারের দায়িত্ব। অন্যথা অর্থনীতি ও জনজীবনে আরও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।’



