Originally posted in BBC.com on 14 April 2023
অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলেন, আজকাল বহুপাক্ষিক বিনিয়োগ প্রস্তাবের মধ্যে ভূরাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত বিষয় থাকে।
বাংলাদেশের পাশে বড় দুটি দেশ আছে, যাদের মধ্যে নানা টানাপোড়েন আছে।
“এ বিষয়টি নিয়েই বাংলাদেশকে সংবেদনশীল হতে হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন মি. ভট্টাচার্য।
শিল্পাঞ্চল গড়ার জাপানি প্রস্তাবটি একটি সম্ভাবনাময় প্রকল্প ধারণা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক বিনিয়োগ, ব্যবসায়িক ও যোগাযোগের চিন্তাটা সঠিক।
তবে সীমান্তের লজিস্টিকস এখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের বড় অন্তরায়। নানা ধরণের বাধা আছে। যদিও এ শিল্পাঞ্চল শুধু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য নয়, বরং এর আঞ্চলিক গুরুত্ব আছে বলেই মনে করেন মি. ভট্টাচার্য।
অবশ্য জাপানের প্রস্তাব নিয়ে এতোটা চিন্তার কিছু নেই বলে মনে করেন এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন যে জাপান সাধারণত বিনিয়োগ প্রস্তাবের অন্তরালে রাজনৈতিক খেলা খুব একটা রাখে না।
“ওরা কমিটেড ইনভেস্টমেন্ট পছন্দ করে। সাধারণত ব্যবসার সাথে কূটকৌশলে তারা যায় না। আবার তারা একচেটিয়া ব্যবসাও করে না। তাই তারা শিল্পাঞ্চল করলে সেটি আদতে বাংলাদেশেরই লাভ হবে। আমরা ব্যবসায়ীরাই উপকৃত হবো,” বলছিলেন মি. আহমেদ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নামে কয়েকশ কোটি ডলারের চীনা উদ্যোগের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকা জুড়ে অবকাঠামো প্রকল্প গড়ে তুলছে ভারত ও জাপান।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এ মূহুর্তে তিনশরও বেশি জাপানি কোম্পানি কাজ করছে। নতুন শিল্পাঞ্চল নিয়ে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে শিগগিরই অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলতি মাসেই জাপান সফরের কর্মসূচি রয়েছে। সেখানে এসব বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও ঢাকায় কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেয়ারব্যাংক সেন্টার ফর চাইনিজ স্টাডিজের গবেষণা সহযোগী অনু আনোয়ার নিক্কেই এশিয়াকে বলেছেন, সোনাদিয়ায় বন্দর নির্মাণে চীনের সাথে চুক্তির পরিকল্পনা সফল হয়নি ‘ভারতের বিরোধিতার কারণে’।
কিন্তু চীন যা দিতে পারে সেটি দেয়ার সক্ষমতা ভারতের নেই। সে কারণে জাপানকে স্বাগত জানিয়েছে তারা। “এখন এই বন্দরে বাংলাদেশের যেমন লাভ হবে তেমনি ভারতেও কম লাভ হবে না,” বলছিলেন মি. আনোয়ার।