Originally posted in কালের কন্ঠ on 1 February 2023
ভর্তুকি সমন্বয়ের অংশ হিসেবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির যে উদ্যোগগুলো নেওয়া হচ্ছে, তাতে আসলে ভোক্তার ওপরে বাড়তি চাপ পড়ছে। এভাবে লাগাতার গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বিকল্প উপায়ে এসব সমাধান হওয়ার সুযোগ ছিল, যাতে ভোক্তার ওপরে কম চাপ পড়তে পারত।
নতুন করে যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি পেল, মূলত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটা হচ্ছে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধি না করেও গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা যেত, যার ফলে হয়তো গ্যাসেরও মূল্যবৃদ্ধির এত প্রয়োজন পড়ত না। আবার ঘন ঘন বিদ্যুতেরও মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন পড়ত না, যদি অভ্যন্তরীণ গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া যেত এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি কম করা যেত। সেদিকে আমরা যেতে পারিনি। ভর্তুকি সমন্বয়ের অংশ হিসেবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করে এখনই সরকারের উচিত হবে গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খোঁজা, যাতে এলএনজি আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো যায়, একই সঙ্গে ভোক্তার ওপর জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির চাপটি কিভাবে কমিয়ে আনা যায়, সেই দিকে লক্ষ রাখা।
গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করার দরকার ছিল। তাহলে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যেত। এতে উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানির নির্ভরতাও অনেকটাই কমে আসত। সাশ্রয় হতো বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিরও কোনো প্রয়োজন হতো না। কিন্তু দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগগুলো এখনো সীমিত পর্যায়েই রয়েছে। এভাবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার ওপর।
লেখক: সিপিডির গবেষণা পরিচালক