Dr Debapriya Bhattacharya held uncertainties of democratic continuity as an impediment for investment, in an interview published in Dainik Amader Shomoy on Wednesday, 31 December 2014.
অর্থনৈতিক উন্নয়নে চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা
গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার সংশয়ে বিনিয়োগ বাড়েনি – ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
রুমানা রাখি
দশম সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি আপাত স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা নিয়ে সংশয় থাকায় ২০১৪ সালে বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগ হয়নি। এমনটাই মনে করেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল আমাদের সময়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারলেই অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে, গতানুগতিক হরতাল কর্মসূচি কেবল অর্থনীতিকেই বাধাগ্রস্ত করছে না, মানুষের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে বিবেচনায় দলগুলোকে বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে ভাবতে হবে। তার মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যমআয়ের দেশে উন্নীত হওয়া না গেলেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রা করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কম ছিল। এটা আমাদের মতো আমদানিনির্ভর দেশের জন্য স্বস্তিদায়ক। মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। সুদহারও কমেছে। খাদ্য নিরাপত্তাও খারাপ ছিল না। তবে বিনিয়োগের েেত্র বিদ্যুৎ, গ্যাস, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিল্প স্থাপনের জমির সমস্যা থেকেই গেছে। তাই ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি। সুদের উচ্চহার বিনিয়োগের প্রতিযোগিতার সমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। প্রশাসনিক সংস্কার না হওয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এখনো বেশ জোরদার। তাই ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে এখনো অস্বস্তি কাটেনি।
আমদানির আড়ালে অর্থপাচার হচ্ছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, আমদানির পরিমাণ বেশি দেখিয়ে অর্থপাচার ও কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। সম্প্রতি অর্থপাচার এত বাড়ছে যে, তা বাংলাদেশের পাওয়া বৈদেশিক সাহায্যের চেয়েও বেশি। তার মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে অর্থপাচারও বাড়ে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-কে শ্লথ করে দেয়, কমিয়ে দেয় কর আহরণের পরিমাণ। এ ছাড়া গত চার-পাঁচ মাস ধরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ল্যমাত্রার তুলনায় বেশ কম। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে দুরাচার বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ অবস্থায় নতুন বছরে আমাদের আশা হবে, কর এবং ব্যাংক ঋণ আদায় পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে। বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে দেশ থেকে অর্থপাচার রোধ করতে হবে। বাণিজ্যিক জ্বালানির সরবরাহ বাড়িয়ে অবকাঠামোসহ বিনিয়োগের অন্যান্য বাধা দূর করতে হবে।