Dr Khondaker Golam Mozzem explains what the RMG sector wiil need to keep on their priority list, published in Shokaler Khobor on Sunday, 14 December 2014.
সুনির্দিষ্ট কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে : খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম
নিজস্ব প্রতিবেদক
তৈরি পোশাক খাত থেকে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মকৌশল ঠিক করা দরকার বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন। সকালের খবরকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, কর্মকৌশল ঠিক করে তা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোক্তা এবং সরকার উভয়কেই কাজ করতে হবে। বড় যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে তার জন্য সরকারের তরফ থেকে এ খাতকে সার্বিক শিল্পায়নের অংশ হিসেবে নিতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে দেখা ঠিক হবে না। যাতে অন্য শিল্প খাতের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত না হয়। সরকারকে সবার আগে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ জমির ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আর উদ্যোক্তাদের জন্য বললে বলতে হয়, লক্ষ্য যখন ঠিক হয়ে গেছে, এখন দরকার কেবল কৌশল ঠিক করে এগিয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সব বাণিজ্য সংগঠনকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
অ্যাপারেল সামিট সম্পর্কে খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অ্যাপারেল সামিট বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাতের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। রানা প্লাজা ও তাজরীন দুর্ঘটনার পর গার্মেন্ট খাতে সেফটি-সিকিউরিটি নিয়ে কী ধরনের সংস্কারমূলক কাজ করা হয়েছে তা বিদেশি ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরা গেছে। এ ছাড়া রফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণের জন্য যেসব বাধা-বিশেষ করে অর্থায়ন, অকাঠামোর উন্নয়ন, পণ্য উত্পাদনের চেইন অব কমান্ড এবং গ্লোবাল মার্কেটে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু সামিটে ইউরোপ-আমেরিকাসহ প্রায় ১০টি প্রধান ক্রেতা দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছিলেন সেহেতু বহির্বিশ্বে একটি ভালো মেসেজ গেছে।
লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সন্তুষ্ট করাও প্রয়োজন। কারণ শ্রমিক অসন্তোষ এই শিল্পে বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করে। সরকারদলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের টাকা দিয়ে কিংবা তাদের ছত্রছায়ায় গঠিত সংগঠন দিয়ে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করার বর্তমান পদ্ধতি বিপদ বয়ে আনবে। মালিকরা এখন যেভাবে ট্রেড ইউনিয়নকে এড়িয়ে যান সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং এটিকে পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রাখতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী মুনাফার একটি অংশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে দিতে হবে মালিকদের। যাতে আপত্কালীন ইতিবাচকভাবে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করা যায়।
শ্রমিক ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিজিএমইএ’র উচিত একটি প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। এক্ষেত্রে ভবিষ্যত্ পণ্য কাঠামোর পরিবর্তন, মজুরি বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, বিশ্ববাজার পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা করে সেই তথ্য-উপাত্ত বিবেচনায় নিতে হবে। তারপর পরিকল্পনাটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বা দরকষাকষিতে যাওয়া উচিত। পরিকল্পনা পাওয়ার পর সরকারের উচিত পোশাক শিল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে কীভাবে এটি গ্রহণ করবে সেটি নির্ধারণ করা। একই সঙ্গে প্রতিশ্রুতিশীল অন্যান্য রফতানি খাত যাতে চাপে না পড়ে সেদিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।