Originally posted in ভোরের কাগজ on 27 January 2023
নীতিমালা, দুর্নীতি, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা এবং বর্তমানে সরকারের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ- এ ৪ কারণে মূল্যস্ফীতি প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে মনে করেন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, সামনে পরিস্থিতি আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যারা স্থির বা কম আয়ের মানুষ, তাদের জীবনযাত্রার মানে একটি খারাপ প্রভাব পড়বে।
এই গবেষক বলেন, সরকারের কর্মসূচি দিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জন্য হয়তো কিছুটা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার মানের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির একটি বড় প্রভাব পড়ছে। কারণ, তারা সরকারের ওমএমএসের পণ্যও নিতে পারছে না। আবার কারো কাছে সাহায্যও চাইতে পারছে না। ফলে নিজেদের মৌলিক চাহিদা থেকে ব্যয় সঙ্কোচন করতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে তাদের পরিবারের সদস্য, এমনকি সন্তানদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ধাপে ধাপে সরকার বিদ্যুতের দাম, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে- যা উৎপাদকের কাছ থেকে এসব ভোক্তার ঘাড়ে পড়ছে।
ড. মোস্তাফিজ বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। কিন্তু একসঙ্গে এত বাড়ানো ঠিক হয়নি। এর আগে বিদ্যুতের দাম কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অদক্ষতার চাপ যেমন ভোক্তাদের ঘাড়ে এসে পড়ছে। দুর্নীতিবাজদের কার্যকলাপে অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের চাপও নিতে হচ্ছে ভোক্তাদের। আবার গ্যাস উত্তোলন করা হয়নি বলে সরকার আমদানি নির্ভরতার দিকে ঝুঁকেছে। এসব কিছুর জন্যও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় কী- জানতে চাইলে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়াতে হবে। আমদানি শুল্ক কমিয়ে ভোক্তাদের ওপর কীভাবে চাপ কমানো যায়, সে বিষয়ে ভাবতে হবে। আমদানি স্তর থেকে ভোক্তা স্তর বা উৎপাদক স্তর থেকে ভোক্তা স্তরে যেসব কারণে দাম আরো বাড়ে সে বিষয়গুলো চিহ্নিত করে আরো বেশি নজরদারি, খবরদারির আওতায় আনতে হবে। শুল্কনীতি এবং মুদ্রানীতিকে কার্যকর করে মূল্যস্ফীতিতে কীভাবে কমানো যায় সেসব বিষয়ও ভাবতে হবে।